Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

স্বামী-সতীনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা॥গোয়ালন্দে গৃহবধূ কলেজছাত্রীর আত্মহত্যা

॥এম.এইচ আক্কাছ॥ রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে স্বামী ও সতীনের অত্যাচারে সাথী আক্তার(২৫) নামের এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছে।
গত ২৮শে ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যায় গোয়ালন্দ পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের আলম চৌধুরী পাড়ায় পিতার বাড়ীতে বসত ঘরের আড়ার সাথে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস নিয়ে সে আত্মহত্যা করে। নিহত সাথী গোয়ালন্দ কামরুল ইসলাম সরকারী কলেজের ¯œাতক প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিল। এ ঘটনায় সাথীর পিতা পান বিক্রেতা আঃ সালাম গতকাল ১লা মার্চ গোয়ালন্দ ঘাট থানায় সাথীর স্বামী রাসেল চৌধুরী (৩০) ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী সেতু আক্তার (৩৫) এর বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায়ে একটি এজাহার দায়ের করেছেন। ঘটনার পর থেকে রাসেল ও সেতু আক্তার পলাতক রয়েছে।
সাথীর পরিবার ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে গোয়ালন্দ পৌরসভার জুড়ান মোল্লা পাড়ার মঞ্জু চৌধুরীর ছেলে রাসেলের সাথে সাথীর বিয়ে হয়। একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর সুবাদে রাসেল সাথীকে নিয়ে ঢাকায় থাকত। কিন্তু গোয়ালন্দে এক কলেজ শিক্ষকের স্ত্রী দুই সন্তানের জননী সেতু আক্তারের সাথে দীর্ঘদিনের পরকীয়ার সম্পর্ক ছাড়তে পারেনি রাসেল। মাস ছ’য়েক আগে সেতু ও রাসেলকে ওই কলেজ শিক্ষক তার ঘরে আপত্তিকর অবস্থায় ধরে ফেলার পর সেতুকে তালাক দেয়। পরে রাসেল সেতুকে বিয়ে করে ঢাকার বাসায় নিয়ে উঠায়। সেখানে রাসেল ও সেতু মিলে সাথীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে বাবার বাড়ীতে চলে আসতে বাধ্য করে। তারপরও সাথী সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করে। গত বৃহস্পতিবার রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর ইউনিয়নের চানপুর এলাকায় রাসেলের বোনের বাড়ীতে একটি অনুষ্ঠান ছিল। রাসেলের কথামতো সাথী একাই রিক্সাযোগে সেই অনুষ্ঠানে যায়। কিন্তু আগে থেকেই রাসেল সেখানে সেতুকে নিয়ে উপস্থিত হয়। অনুষ্ঠানে রাসেল সেতুকে স্ত্রী হিসেবে সকলের সাথে পরিচিত করার পাশাপাশী একসাথে খাওয়া-দাওয়া ও অনুষ্ঠান উপভোগ করে। সাথী ছিল একেবারেই একাকী ও উপেক্ষিত। এ নিয়ে অনুষ্ঠানের ফাঁকে রাসেল ও সেতুর সাথে সাথীর কথা কাটাকাটি করে। তারা দু’জনই সাথীকে অপমান করে প্রকাশ করে তাদের মাঝে সাথীর আর কোন জায়গা নেই। এরপর অপমানীত সাথী কিছু না খেয়েই বাবার বাড়ীতে ফিরে এসে বসত ঘরের আড়ার সাথে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস নেয়। সাথীর মা অসুস্থতার কারণে সে সময় রাজবাড়ীতে ডাক্তার দেখাতে যাওয়ায় বাড়ী খালি ছিল। প্রতিবেশীরা সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঘরের মধ্যে সাথীকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামায়।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি এজাজ শফী জানান, খবর পেয়ে রাতেই সাথীর লাশ উদ্ধার করে শুক্রবার ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় সাথীর পিতা বাদী হয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায়ে রাসেল ও সেতুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করার চেষ্টা করছে।