Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

দেবগ্রামে রাজনৈতিক বিরোধে নাবালিকা অপহরণের চেষ্টা॥পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

॥এম.এইচ আক্কাছ॥ গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের উত্তর পাঁচুরিয়া গ্রামের নবম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তবে অভিযুক্তদের দাবী, রাজনৈতিক নেতৃত্বের দ্বন্দের জের ধরে তাদেরকে ফাঁসানোর জন্য অপহরণের নাটক সাজানোর পাশাপাশি মসজিদের মাইকে প্রচার করে তাদের বাড়ী-ঘরে হামলা চালিয়ে লুটপাট করা হয়েছে। স্থানীয় বিএনপি নেতা নিজাম মোল্লা ও ইসমাইল মোল্লার মধ্যে এ দ্বন্দ্ব চলছে।
উত্তর পাঁচুরিয়া গ্রামের স্থানীয় চৌধুরী মাহবুব হোসেন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ওই স্কুল ছাত্রীকে গত ১৫ই ফেব্রুয়ারী দিবাগত রাতে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া যায়।
ওই স্কুল ছাত্রী জানায়, প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে রাত সাড়ে ১২টার দিকে সে ঘরের বাইরে যায়। এ সময় বাইরে ওৎ পেতে থাকা তিন যুবক তার মুখে রুমাল চেপে ধরে তাকে অপহরণ করে। এ সময় সে স্থানীয় রহমত আলী মোল্লার ছেলে ইসমাইল মোল্লা (৪০)কে চিনতে পারে। এরপর সে অজ্ঞান হয়ে যায়।
ওই স্কুল ছাত্রীর ভাই জানায়, তার বোন অপহরণ হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে তারা বিষয়টি টের পায়। এ সময় তারা দ্রুত স্থানীয় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেওয়ায় এলাকাবাসী বাইরে বেরিয়ে আসে। এতে অপহরণকারীরা তার বোনকে বাড়ীর অদূরে রাস্তার পাশে ফেলে যায়। উদ্ধার হওয়ার পর তার বোন জানায় ইসমাইলসহ আরো দুই যুবক তাকে অপহরণ করেছিল। এছাড়া পূর্বের দ্বন্দ্বের জের ধরে ইসমাইলরা তাদের পরিবারের কয়েকজনকে ইতিপূর্বে মারধর ও তার বিরুদ্ধে অনৈতিক বিভিন্ন অভিযোগ করছে।
স্কুল ছাত্রীর বাবা জানায়, পরিবারের সম্মানের কথা ভেবে তারা গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত থানা পুলিশে লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তবে পুলিশকে জানানো হয়েছে। ইসমাইলের পরিবারের সাথে তাদের প্রায় একবছর ধরে রাজনৈতিক ও পারিবারিক দ্বন্দ্ব চলছে।
এদিকে ইসমাইল মোল্লার অভিযোগ, ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতির পদ নিয়ে তার ও নিজাম মোল্লার মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। তাকে বহুভাবে ভয়ভীতি ও হয়রানীর চেষ্টাও চলছে। মেয়ে অপহরণের ঘটনাটি সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ও সাজানো একটি নাটক বলে আমাদের মনে হচ্ছে। অপহরণের অপপ্রচার দিয়ে তারা ওই রাতেই আমাদের বাড়ী-ঘরে লাঠিসোটা নিয়ে হামলা, ভাঙচুর, মারপিট ও লুটপাট করে। তার ঘর থেকে লুট হয়েছে সাড়ে ৩ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ২২হাজার টাকা। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার গোয়ালন্দ ঘাট থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
ইসমাইলের বড় ভাই নজরুল ইসলাম মোল্লা জানায়, ওই রাতের পর থেকে তিনি স্ত্রী ও চার মেয়েকে নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। রাতে তার বাড়ীর পাশের মেহগুনি বাগানে অজ্ঞাত লোকজন ঘোরাঘুরি করে। হামলায় তার স্ত্রী লিলি বেগম আহত হয়েছে।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ওসি মির্জা আবুল কালাম আজাদ বলেন, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে সমস্যা চলছে বলে জেনেছি। গত বুধবার রাতে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে। ইসমাইল মোল্লার পক্ষ থেকে থানায় একটি অভিযোগ দেয়া হলেও নিজাম মোল্লার পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত কোন অভিযোগ করা হয়নি। পুরো বিষয়টি পুলিশ বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রেখেছে।