Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

রাজবাড়ীর ভান্ডারিয়া দরবার শরীফের পীর মাওঃ মোজাম্মেল হকের ইন্তেকাল

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের ভান্ডারিয়া দরবার শরীফের পীর এবং ভান্ডারিয়া সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মোঃ মোজ্জাম্মেল হক(৮৮) আর নেই।
আজ ১৪ই ডিসেম্বর বিকাল সাড়ে ৩টায় তিনি ফরিদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালে বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ্য হয়ে ইন্তেকাল করেছেন(ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও ৬সন্তানসহ অসংখ্য ছাত্র, ভক্ত ও মুরীদ রেখে গেছেন। আগামীকাল ১৫ই ডিসেম্বর দুপুর আড়াইটায় ভান্ডারিয়া মাদরাসা ময়দানে তার নামাজে জানাযা শেষে মরদেহ দাফন করা হবে। মরহুমের রূহের মাগফিরাতের জন্য দেশবাসীর কাছে তার পরিবারের পক্ষ থেকে দোয়া কামনা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মোঃ মোজ্জাম্মেল হক ভান্ডারিয়া মাদরাসা, মসজিদ ও খানকাসহ বেশ কিছু দ্বীনি প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ১৯২৯/৩০ সালে তৎকালীন গোয়ালন্দ মহকুমার(বর্তমানে রাজবাড়ী সদর উপজেলার) পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের কোনাইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ভারতের ফুরফুরা শরীফে লেখাপড়া করার সময় হযরত আঃ হাই ছিদ্দিকী(রহঃ) এর হাতে তরিকতের বাইয়্যাত গ্রহণ করেন। পরে ছারছিনা শরীফে গমন পূর্বক ১৯৫২ সালে আলিম, ১৯৫৪ সালে ফাজিলর এবং ১৯৫৬ সালে কামিল পাশ করেন। এ সময় তিনি ছারছিনার পীর মাওলানা জামান হযরত নেছারুদ্দীন(রহঃ) ও আবু জাফর ছালেহ(রহঃ) এর সান্নিধ্য লাভ করেন। কামিল পরীক্ষার কয়েক মাস পূর্বে তিনি বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার শিবপুরের পীর মোস্তফা সিরাজুম্মুনীর(রহঃ) এর মেয়ের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। কামিল পাশ করে বাড়ী ফিরে আসার পর বিভিন্ন স্কুল ও মসজিদে চাকুরীর আহ্বান আসতে থাকলেও শরীয়ত ও মারেফাতের খেদমতের উদ্দেশ্যে পৈত্রিক জমিতে ভান্ডারিয়া খানকাহ মসজিদ ও মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর থেকে মাদরাসায় শিক্ষাদান এবং নিয়মিত মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। মাদরাসার অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন স্থানে ওয়াজ-নসিহত করে বেড়াতেন। ১৯৯৭ সালে তিনি মাদরাসার অধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন। ১৯৯৮ সালে তিনি পবিত্র হজ্বব্রত পালন করেন। তিনি ১৯৯৫ সালে গোয়ালন্দ মোড়ে তালিমুল ইসলাম খানকা শরীফ মসজিদ ও মাদরাসা স্থাপন করেন। এ প্রতিষ্ঠানের জন্য তিনি প্রায় ১একর জমি দান করেছেন। এছাড়াও তিনি ১৯৯৬ সালে ‘বাংলাদেশ সালেক কমিটি’ নামের একটি ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। চারিত্রিক গুণাবলীর জন্য তিনি দলমত নির্বিশেষে সকলের শ্রদ্ধাভাজন ছিলেন।