Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

মনোনয়ন বঞ্চিত দলের প্রার্থীদের মহাজোট প্রার্থীর পক্ষে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের অনুরোধ শেখ হাসিনার

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজ দলের যারা মনোয়ন পাননি, অথচ বিভিন্ন আসনে প্রার্থী হয়েছেন, তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আপনার কাছে আমার বিশেষ অনুরোধ, ঐক্যবদ্ধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের স্বার্থে মহাজোট প্রার্থীর পক্ষে আপনার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে মহাজোটকে বিজয়ী করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করবেন। আপনার ত্যাগ, শ্রম ও আন্তরিকতা সবকিছুই আমার বিবেচনায় আছে।’
গতকাল ৮ই ডিসেম্বর গণমাধ্যমে পাঠানো এক চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী এই আহ্বান জানান। চিঠিতে দলের সভাপতি শেখ হাসিনার স্বাক্ষর দেওয়া রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তির জন্য প্রায় ৪হাজারের অধিক ব্যক্তি মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তাদের প্রায় সকলেরই ত্যাগ ও অবদান রয়েছে। রাজনৈতিক ত্যাগ, দক্ষতা, যোগ্যতা ও জনপ্রিয়তার বিচারে প্রায় প্রত্যেকটি আসনেই ছিল একাধিক যোগ্য প্রার্থী।’
মনোনয়ন না পাওয়া প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আশা করি, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজ নিজ এলাকায় আওয়ামী লীগ ও মহাজোট মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে আপনাদের সাংগঠনিক দক্ষতা, শক্তি ও সামর্থ্য আওয়ামী লীগের বিজয়কে সুনিশ্চিত করবে।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশের গত এক দশকের অর্জিত উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে সংগঠনের একজন আদর্শবান, ত্যাগী ও বিশ্বস্ত নেতা হিসেবে সর্বস্তরের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা ও সার্বিক কর্মকান্ডে আপনার স্বতঃস্ফূর্ত ও সক্রিয় অংশগ্রহণ একান্তভাবে প্রত্যাশা করছি।’
দলীয় মনোনয়নবঞ্চিতদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের হিংস্র থাবা থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করে বাংলাদেশকে টেকসই গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে আমরা সমমনা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাদের প্রাণপ্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়লাভ করে আবারও বাংলাদেশের জনগণের সেবা করার সুযোগ পাবে। সেই বিজয়ের অংশীদার হবেন আপনিও। আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, আওয়ামী লীগ যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে, তাহলে নৌকা মার্কাকে পরাজিত করার সাংগঠনিক শক্তি আর কারও নেই।’
মনোনয়ন প্রদানের সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিগত প্রক্রিয়া ও সংসদীয় বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যাদের মনোনয়ন দিতে না পারা যায়নি, তাদের জন্য তিনি আন্তরিভাবে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী ও কল্যাণমুখী রাজনৈতিক দলে পরিণত করার কাজে আপনার ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়।’ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও দেশের কল্যাণে নিরবচ্ছিন্ন ভূমিকার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ ও প্রাণ প্রিয় সংগঠন আওয়ামী লীগের প্রতি আপনার ভালবাসা আনুগত্য-বিশ্বস্ততা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।’
মনোনয়নবঞ্চিতদের উদ্দেশ্যে চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যগণের সুচিন্তিত মতামত, তৃণমূল নেতাদের পরামর্শ এবং আমাদের সংগঠন কর্তৃক পরিচালিত একাধিক নিবিড় জরিপ কার্যক্রমের সুপারিশের ভিত্তিতে দলীয় প্রার্থিতা চূড়ান্ত করা হয়। ‘একাধিক আবেদনকারীর মধ্য থেকে একজনকে প্রার্থী হিসেবে নির্ধারণ করার কাজটি ছিল অত্যন্ত কঠিন ও দুরুহ। আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড অত্যন্ত সর্তকতার সাথে প্রতিটি আবেদনপত্র ও প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত এবং মাঠ পর্যায়েরর জরিপের ফলাফল পর্যালোচনা করে একটি প্রতিদ্বন্ডিতাপূর্ণ নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে দলীয় প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করছে।’