Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বিজয় দিবস উদযাপনের প্রস্তুতি সভা

॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল ১২ই নভেম্বর সকালে কালেক্টরেটের সম্মেলন কক্ষে মহান বিজয় দিবস উদযাপনে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীর সভাপতিত্বে সভায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(প্রশাসন ও অপরাধ) মোহাম্মদ রাকিব খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মোহাম্মদ আশেক হাসান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আলমগীর হুসাইন, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী খান. এ শামীম, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রুবাইয়াত মোঃ ফেরদৌস, সনাকের সভাপতি প্রফেসর শংকর চন্দ্র সিনহা ও জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মহসিন উদ্দিন বতু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি এমওসিএস ডাঃ কাজী শফিউল আজম শুভ, জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনারগণ, বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ, বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ, সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিগণ ও এনজিও প্রতিনিধিগণসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী তার বক্তব্যে বলেন, মহান স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশকে হানাদার মুক্ত করতে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে মুক্তিযোদ্ধাগণ ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় ছিনিয়ে এনেছিল। বাঙালী জাতির জীবনে ১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস একটি গুরুত্বপূর্ণ দিবস। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে শাহাদতবরণের পর দীর্ঘ ২১বছর স্বাধীনতা বিরোধী চক্র এদেশের রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাসকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সামনে বিকৃতভাবে প্রকাশ করে তাদেরকে ভুল পথে ধাবিত করেছিল। পরবর্তীতে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় আসার পর মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সামনে তুলে ধরাসহ স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক সম্মান প্রদান করাসহ প্রতি বছর স্বাধীনতা ও বিজয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করছে। তারই ধারাবাহিকতায় আসন্ন সংসদ নির্বাচন হওয়া সত্ত্বেও আগামী ১৬ই ডিসেম্বর রাজবাড়ীতে পূর্বের যে কোন সময়ের চেয়ে অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশে মহান বিজয় দিবস পালন করা হবে। এই উপলক্ষে ১৬ই ডিসেম্বর মহান স্বাধীনতা দিবসে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারী, আধা-সরকারী, স্বায়ত্বশাসিত, বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ও ভবনগুলোতে যথাযথ মর্যাদায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন, পুলিশ লাইন্সে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে মহাস বিজয় দিবসের শুভ সূচনা, সকাল ৬টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণের মহান স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যে পুষ্পমাল্য অর্পণ। এরপর পর্যায়ক্রমে রাজবাড়ী জেলার শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে নির্মিত শ্রীপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ, রেলগেটস্থ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি ফলক, নিউ কলোনী ও লক্ষ্মীকোলে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের কবরস্থানে শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পণ শেষে সকাল সাড়ে ৮টায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ সম্প্রচার, ৯টায় কাজী হেদায়েত হোসেন স্টেডিয়ামে সমাবেশ, কুচকাওয়াজ ও শারীরিক কসরত প্রদর্শনী, দুপুর ১২টায় জেলা প্রশাসকের বাসভবনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদান, বিকাল ৩য় স্টেডিয়ামে প্রীতি ফুটবল, দাঁড়িয়াবান্ধা খেলা, সাড়ে ৩টায় অফিসার্স ক্লাব প্রাঙ্গণে মহিলাদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সন্ধ্যা ৬টায় বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ খুশি রেলওয়ে ময়দানে ‘সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে মুক্তিযুদ্ধের তাৎপর্য’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনীসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। মহান বিজয়ের দিবসের দুপুরে হাসপাতাল, কারাগার ও এতিমখানায় উন্নতমানের খাবার পরিবেশন, বিভিন্ন সরকারী, আধা সরকারী ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান ও গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সড়কে আলোকসজ্জিতকরণ, ট্রেন, ফেরীসহ বিভিন্ন যানবাহন জাতীয় পতাকা দিয়ে সজ্জিতকরণ, সকালে অফিসার্স ক্লাব প্রাঙ্গণে শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, বাদ যোহর মসজিদসমূহে মুক্তিযোদ্ধাাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনাসহ দেশ ও জাতির শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাত এবং সুবিধামত সময়ে মন্দির, গীর্জা ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনা করা হবে। এছাড়াও ১৪ই ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে লোকসেডের বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভে সকালে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও বিকালে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বালন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং ১৫ই ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ খুশি রেলওয়ে ময়দানে রাজবাড়ী জেলা ব্রান্ডিং বিষয়ে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।