Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

দৌলতদিয়া-বাঘাবাড়ি নৌপথে ঝুঁকি নিয়ে নৌ চলাচল

॥আবুল হোসেন॥ রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া এবং পাবনার জেলার বাঘাবাড়ি নৌপথে পানি কমে যাওয়ায় চট্রগ্রাম থেকে আসা সার ও কয়লাবাহী কার্গো সরাসরি চলতে পারছেনা।
পাবনার কয়েকটি স্থানে ডুবোচর দেখা দেওয়ায় কয়েক মাস ধরে চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। এসব পণ্যবাহী কার্গো রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া রুটের মাঝ নদীতে নোঙ্গর করায় ফেরী, লঞ্চ চলছে ঝুকি নিয়ে।
সরেজমিন দেখা যায়, দৌলতদিয়া ফেরী ঘাটের অদূরে মাঝ নদীতে এমভি আছিয়া লুৎফর, এমভি বিউটি ভাগ্যকূল, এমভি আরাফ-৩, এমভি কর্ণফুলি-৬, এমভি খালেদ হাসান, এমভি বাংলার জিয়াদ, এমভি খান শিপিং কর্পোরেশন, এমভি আলযামী, এমভি বিউটি লোহাগাড়া-১, এমভি পোটন-৩, এমভি এইচ কবির, এমভি গোলাপ-১, এমভি সায়হান, এমভি ওয়াটার হেন, এমভি রশ্মি, এমভি আলযামী, এমভি আঠার বাকি, এমভি সোলেমান-১, এমভি ফাহাদ-৩, এমভি মৌমনিসহ প্রায় দুই ডজন কার্গো রয়েছে। আরো প্রায় এক ডজন জাহাজ এক সপ্তাহ থাকার পর একদিন আগে এখান থেকে ছেড়ে যায়।
জাহাগুলি নদীর মাঝামাঝি নোঙ্গর করায় পাশ দিয়ে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটের যাত্রীবাহী লঞ্চ, ফেরীসহ ইঞ্জিন চালিত ট্রলার খুবই সতর্কতার সাথে চলাচল করতে দেখা যায়। বিশেষ করে যাত্রীবাহি ট্রলার ও লঞ্চগুলো একেবারে পাশ দিয়ে যাওয়ায় যেকোন মুহুর্তে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
এমভি এইচ কবির এর সুকানি নাজমুল হাসান জানান, চট্রগ্রাম থেকে সাড়ে পাঁচ’শ মেট্রিক টন ইউরিয়া কাপপো সার নিয়ে তিন দিন ধরে এখানে আছি। আমার আগে ১২/১৩টি জাহাজ থেকে মাল নামানোর অপেক্ষায় আছে। তাদের শেষে আমার সিরিয়াল। হয়তো আরো তিন-চার দিন অপেক্ষা করতে হবে। এতে বাড়তি খরচ হচ্ছে।
এমভি গোলাপের মাষ্টার জানান, পাঁচদিন ধরে তারাও এখানে আছেন। জাহাজ থেকে প্রায় ৩৫০০বস্তা সার কমানোর পর বাঘাবাড়ি যাবেন। একটি বড় জাহাজ চলাচলের জন্য যে পানির গভীরতা দরকার তা বেশ কয়েকটি স্থানে না থাকায় সরাসরি যাওয়া যাচ্ছেনা। এ সময় আরো বেশ কয়েকজন মাষ্টার জানান, পাবনার নগরবাড়ির কাছে মোল্লার হাট, লতিফপুর ও মোহনগঞ্জ এলাকায় নাব্যতা কমে ডুবোচর জেগে ওঠায় সরাসরি জাহাজ যেতে পারছেনা। ফলে চট্রগ্রাম বা মংলা বন্দর থেকে আসা এসব পণ্যবাহি জাহাজ এখানে নোঙ্গর করতে বাধ্য হচ্ছে। পরে ইঞ্জিন চালিত ট্রলারে কয়েক’শ টন মালামাল নামানোর পর জাহাজগুলি ছেড়ে যায়।
মাঝ নদীতে পণ্যবাহী কার্গো নোঙ্গর করে রেখে মালামাল আনলোড করায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে চলাচলরত লঞ্চ, ফেরী ও যাত্রীবাহী ট্রলার চলছে ঝুকি নিয়ে। পণ্যবাহি কার্গোর পাশ দিয়ে চলাচল করায় যেকোন মুহুর্তে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম জানান, আগে পণ্যবাহী জাহাজ দৌলতদিয়া ঘাট থেকে দূরে নদীর পাড়ে নোঙ্গর করায় তেমন সমস্যা হতো না। বেশ কিছুদিন ধরে নদীর মাঝে অবস্থান করায় লঞ্চ ও ফেরি চলতে হচ্ছে খুব সতর্কতার সাথে। যেকোন মুহুর্তে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ আরিচা কার্যালয়ের বন্দর কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, বিষয়টি আমার জান ছিলনা। খোঁজ খবর নিয়ে নদীর তীরে নোঙ্গর করার পরামর্শ দেয়া হবে। কথা না মানলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিআইডব্লিউটিএ আরিচা অঞ্চলের উপপরিচালক(নৌ সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগ) আব্দুস সালাম বলেন, ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি লোড নেয়ায় সরাসরি চলতে পারছেনা বলে পাবনার মোল্যার হাট ও লতিফপুরে খনন করা হয়েছে। বর্তমানে সেখানে পানির গভীরতা সাড়ে আট থেকে সাড়ে নয় ফুট।