॥মোক্তার হোসেন॥ রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলায় এলজিইডির অধীনে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। বিগত একদশকে পল্লী অবকাঠামো উন্নয়নে এলজিইডির অর্জন বিগত কয়েক দশকের কাছাকাছি।
এলজিইডির পাংশা উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আলমগীর বাদশা বলেছেন, ২০০৯-২০১৮ সালে এলজিইডির মাধ্যমে বাস্তবায়িত পাংশা উপজেলায় উল্লেখযোগ্য প্রকল্পসমূহের মধ্যে ৩৪৫ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক উন্নয়ন এবং ১৩৫.০৬ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়েছে। একই সাথে ১৫কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক নির্মাণাধীন এবং ৬.৫০ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক রক্ষণাবেক্ষণাধীন রয়েছে। ৩৫৫.৮০ মিটার সেতু/কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া এরই মধ্যে কলিমহর ইউনিয়নে ৬০ মিটার দীর্ঘ ব্রিজের এবং গড়াই নদীতে লাঙ্গলবাঁধ সড়কে(কসবামাজাইল ইউপির নাদুরিয়াঘাট) ৬৫০ মিটার দীর্ঘ ব্রিজ নির্মাণের টেন্ডার হয়েছে। যাচাইঅন্তে খুব শিঘ্রই এ দুটি ব্রিজ নির্মাণের কার্যাদেশ প্রদান করা হবে।
তিনি জানান, ৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নতুন করে পাংশা উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের পথে। এছাড়া ১টি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন ও ২টি হাট-বাজার নির্মাণ করা হয়েছে। ২০০৯-২০১৮ সালে পাংশা উপজেলায় ৫৪টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ২২টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণাধীন রয়েছে। বিভিন্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের মেরামত ও বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে পৃথক ৭টি ১তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা পরিবার তাদের ভবন ব্যবহার করছেন। ২হাজার ৭৫০ হেক্টর জমির পানি সম্পদ উন্নয়ন করা হয়েছে। ২টি স্লুইজ/রেগুলেটর এবং ২২ কিলোমিটার খালখনন করা হয়েছে। এ ধরণের আরো বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে।
পাংশা উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আলমগীর বাদশা আরো বলেন, ২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে এবং মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ ও যাদুঘর নির্মাণ প্রকল্পে ৩৫ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। স্থান চূড়ান্ত হলেই মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ ও যাদুঘর ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে। এছাড়া ৮৭লাখ টাকা ব্যয়ে যশাই ও মৌরাট ইউনিয়নে পৃথক দু’টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস ভবনের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আলমগীর বাদশা বলেন, রাজবাড়ী-২ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিমের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এলজিইডি অধিদপ্তরের মাধ্যমে নানা উন্নয়নমূলক প্রকল্প যথাযথভাবে বাস্তবায়নের ফলে এলাকার মানুষের আর্থ সামাজিক অবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে।
তিনি বলেন, এলজিইডি অধিদপ্তর গ্রামের প্রাকৃতিক সবুজ পরিবেশ অক্ষুণœ রেখে, শহরের সাথে যোগাযোগ সহজতর এবং গতিশীল করার লক্ষ্যে কাজ করছে। হাট-বাজার, ইউনিয়ন, উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ সড়কসমূহ সম্প্রসারিত করে ডাবল লেন করা হবে। শহরের সাথে গ্রামের সংযোগ সড়কসমূহ যানজটমুক্ত ও প্রশস্ত করা হবে। এতে মানুষ গ্রামে থেকে সহজেই চাকরী ও ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারবে। এভাবেই আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি ঘটিয়ে ক্রমশ উন্নত দেশের পথে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
রাজবাড়ী জেলা পরিষদের সদস্য রোটারীয়ান উত্তম কুমার কুন্ডু বলেন, রাজবাড়ী-২ আসনের এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম এলাকার উন্নয়নের রূপকার। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ প্রভৃতি ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। নবনির্মিত পাংশার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন খুব শিঘ্রই আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করা হবে বলে জানান তিনি।