॥দেবাশীষ বিশ্বাস॥ ২২দিনের সরকারী নিষেধাজ্ঞা শেষে রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা পদ্মা নদীতে মাছ ধরতে নামলেও দেখা মিলছে না ইলিশের। নদীতে ইলিশ না পেয়ে খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে তাদের।
গত বছর প্রজনন মৌসুমের পরে পদ্মায় অনেক ইলিশ পাওয়া গেলেও এবার আর দেখা মিলছে না। নিষেধাজ্ঞার পর প্রায় ১৫দিন পর্যন্ত পদ্মায় ইলিশ থাকায় প্রতি বছর লাভের মুখ দেখে থাকে এ জেলার জেলেরা। কিন্তু এবার ইলিশ রক্ষা অভিযানের ২২দিনে ডিম ছেড়ে অধিকাংশ ইলিশই ভাটিতে(সাগরের দিকে) চলে যাওয়ায় পদ্মায় ইলিশের আকাল পড়েছে। ফলে ইলিশ ধরার জাল-নৌকার খরচই উঠে আসবে না বলে আশংকার মধ্যে রয়েছে জেলেরা।
অপরদিকে ঘাটে ইলিশ মাছের দাম কম হওয়ার আশায় অনেকে মাছ কিনতে এসে দাম শুনে হতাশ হয়ে বাড়ী ফিরছে। এখানে মধ্যম সাইজের ইলিশ ৭শ টাকা থেকে ৯শ টাকা আর ছোট সাইজের ইলিশ ৪শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আড়তগুলোতে সেভাবে ইলিশ না আসায় বিপাকে পড়েছে মৎস্য ব্যবসায়ীরাও।
গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার জেলে সাধন হলদার বলেন, এবার গাঙে মাছ খুবই কম। সকাল থেকে ৩টি খ্যাও দিয়ে মাত্র ৩ কেজি ইলিশ পেয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় বেশী হওয়ায় সব মাছ ভাটিতে চলে গেছে। প্রতি বছর এ সময়ে জেলেরা ইলিশ ধরে যে টাকা আয় করতো এবার তার ২০ ভাগের ১ভাগও হবে কিনা সন্দেহ।
সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের জেলে মহসীন আলী বলেন, অভিযানের সময় আমরা প্রশাসনের আতংকে জাল নিয়ে নদীতে নামতে পারি নাই। এখন নদীতে গিয়ে কোন ইলিশ পাচ্ছি না। এবার হয়তো খরচের টাকাও উঠবে না।
নদীর তীরে মাছ কিনতে আসা আরিফ শেখ বলেন, গত বছর এই সময় এসে অনেক সস্তায় ইলিশ কিনেছি। কিন্তু এবার ইলিশ নাই বললেই চলে। যে ইলিশ রয়েছে তার দাম চড়া।
দৌলতদিয়া ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান বলেন, গত বছর প্রজনন মৌসুম শেষে ১৫দিনে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার ইলিশ বিক্রি হয়েছিল। এবার সর্বোচ্চ ৫লক্ষ টাকার মতো বিক্রি হতে পারে।
পদ্মায় ইলিশ কম পাওয়া প্রসঙ্গে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ মজিনুর রহমান বলেন, এবার পদ্মায় কম মা ইলিশ এসেছিল। সেগুলো ডিম ছেড়ে আবার সাগরে চলে গেছে। যে কারণে পদ্মায় ইলিশের দেখা মিলছে না। জেলেদের কারণেই মাছের উৎপাদন কমেছে। এবার পদ্মায় প্রায় ৫০ শতাংশ ইলিশ ডিম ছেড়েছে। এর ১০ শতাংশও যদি টিকিয়ে রাখা যায় তবে কেজি প্রতি ইলিশের দাম হবে ২শত টাকা। জেলেদের সচেতন করতে পারলে ইলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।