Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

শেখ রাসেলের ৫৪তম জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে রাজবাড়ীতে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৫৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাজবাড়ী জেলা শিশু একাডেমীর আয়োজনে গতকাল ১৮ই অক্টোবর বেলা ১১টায় শিশুদের চিত্রাংকন ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এবং পুরস্কার বিতরণ করেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী।
জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীর সভাপতিত্বে সম্মানিত বিশেষ অতিথি হিসেবে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কামরুন নাহার চৌধুরী লাভলী, বিশেষ অতিথি হিসেবে পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি,বিপিএম-সেবা ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার, অন্যান্যের মধ্যে জেলা এনসিটিএফের উপদেষ্টা সাদমান সাকিব রাফি ও সদস্য আক্তারুর রহমান রাহাত প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ও অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মোঃ আলীমুর রেজা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যগণসহ শাহাদৎবরণকারী সকলের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত আদরের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতা বিরোধী পাকিস্তানী চক্রসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারী ও পাকিন্তানের এদেশীয় দোসরদের গভীর ষড়যন্ত্রে বিপথগামী উচ্চাভিলাসী নরপিশাচ বাংলাদেশকে নেতৃত্বশূন্য করতে বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের সকল সদস্যকে হত্যা করে। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত যত হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে তার মধ্যে ১০বছরের শিশু শেখ রাসেলের হত্যাকান্ডটি সবচেয়ে হৃদয় বিদারক। ওই দিন বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সাথে যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিল তারা এখনও সক্রিয়। সেই স্বাধীনতা বিরোধী চক্র জামাত-শিবিরের আশ্রয় ও প্রশ্রয়দাতা বিএনপির অনেক নেতাই বর্তমানে টেলিভিশন টকশোতে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন রকম বক্তব্য প্রদান করছে। এমনকি বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর যে গ্রেনেড হামলা হয়েছিল সেটি নিয়েও এই স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের পৃষ্ঠপোষকরা বলছে ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার দিন তিনি ভ্যানিটি ব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে গিয়েছিলেন। এই ধরণের কথা স্বাধীনতা বিরোধী চক্রকে যারা মদদ দিয়েছিল একমাত্র তারাই বলতে পারে। এই সকল স্বাধীনতা বিরোধী চক্র সম্পর্কে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশকে অত্যন্ত সুন্দরভাবে পরিচালনা করছে। তার এই দেশের প্রতি ভালোবাসা ও সুদূরপ্রসারী চিন্তা-ভাবনার কারণেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে রোল মডেল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। শুধু তাই নয়, তিনি তার অত্যন্ত আদরের ছোট ভাই শেখ রাসেলের চেতনাকে বুকে ধারণ করে এদেশের শিশুদের অধিকার রক্ষায় বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করেছেন। তার এই উন্নয়নের কর্মকান্ডের ফলে শিশুরা আজ অনেক অগ্রগামী বলে তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন। এছাড়াও তিনি তার বক্তব্যে শেখ রাসেলের জীবনের বিভিন্ন বিষয়, শেখ হাসিনার উন্নয়ন-অগ্রযাত্রাসহ দেশের সামগ্রিক অবস্থা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। তিনি দেশের উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে উপস্থিত সকলকে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে নৌকা প্রতীকে পুনরায় ভোট দিতে আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানের সম্মানিত বিশেষ অতিথি সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কামরুন নাহার চৌধুরী লাভলী, সভাপতি জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী, পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বারসহ অন্যান্য বক্তাগণ তাদের বক্তব্যে ৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের বঙ্গবন্ধু ও তার কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলসহ শাহাদৎবরণকারী সকলের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে ১৫ই আগস্টের কালোরাত্রের হত্যাকান্ড, খুনী মোশতাক ও জিয়াউর রহমানের ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ সংসদে পাসের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের শাস্তিকে বাঁধাগ্রস্ত করা, শেখ রাসেলের জীবন বৃত্তান্ত, স্বাধীনতা বিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকা, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিশুদের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ ও শিশু রাসেলের ৫৪তম জন্ম বার্ষিকীর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
অতিথিদের বক্তব্যের শেষে শেখ রাসেলের জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। পুরস্কার বিতরণের শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।