॥গোয়ালন্দ প্রতিনিধি॥ রাজবাড়ী জেলার ঐতিহ্যবাহি গোয়ালন্দ নাজির উদ্দিন সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে গত ৭ই অক্টোবর দুপুরে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্কাউটিং কার্যক্রম এর উদ্বোধন ও চার্টার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী।
এ সময় বিদ্যালয়ের সার্বিক পরিবেশ পরিস্থিতি দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একটি প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়ের পড়াশুনার মান উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ। এছাড়া তিনি স্কুলের চারপাশ অপরিস্কার ও অন্যান্য বিষয় দেখে ক্ষুদ্ধ হন।
পরে বাংলাদেশ স্কাউট গোয়ালন্দ উপজেলা শাখার আয়োজনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবু নাসার উদ্দিনের সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় যোগ দিয়ে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, সবাইকে সুস্থ্য থাকতে হলে পড়াশুনার পাশাপাশি স্কাউটের প্রতি মনোযোগি হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্কাউটের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন। দেশের যে কোন ক্রান্তিলংগ্নে স্কাউটের ভূমিক অধিক গুরুত্ব। তাই সবাইকে স্কাউটের আওতায় আসতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বৃহত্তর ফরিদপুরের মধ্যে গোয়ালন্দ উপজেলায় শতভাগ স্কাউটের আওতায় আনা হয়েছে। এ অর্জনের জন্য ইউএনও আবু নাসার উদ্দিনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশসহ সকলের পক্ষ থেকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান। একজন ভালো মনের ইউএনও হলে অনেক কিছু করা সম্ভব। ইতিমধ্যে গোয়ালন্দের বিভিন্ন ভালো কর্মকান্ড করে তিনি দেখিয়েছেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে তিনি গাজীপুর যাচ্ছেন। তার রেখে যাওয়া ভালো কাজ সবাই খেয়াল করলে আরো অনেক ভালো কিছু করা সম্ভব।
বিদ্যালয়ের সার্বিক পরিবেশ দেখে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠে যদি কেউ খড় শুখায় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করবে কিভাবে? শিক্ষকদের দায়িত্বে অবহেলার কারনে পড়াশুনা খারাপ হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক আসলে থাকতে চায়না এমন নানা ধরনের অভিযোগ করেন তিনি। এজন্য ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে সর্তক করে বলেন, সরকার শিক্ষার প্রতি বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে সেখানে একটি ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়ে পড়ার মান খারাপ মেনে নেয়া যায়না। যেখানে আমি এই দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী, আমার নিজ জেলায় এমন বিষয় মেনে নিবনা। এ সময় বিদ্যালয়ে শিক্ষক স্বল্পতার বিষয়টি তিনি গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন বলে আশ^স্থ্য করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু নাসার উদ্দিন বলেন, গোয়ালন্দের ৫১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৭টি মাদ্রাসা, ১১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২টি কলেজ ও ২টি কিন্ডারগার্টেনসহ ৭৩টি প্রতিষ্ঠানে স্কাউটিং কার্যক্রম চালু হয়েছে। বিগত এক বছরে দুটি ওরিয়েন্টেশন ও দুটি বেসিক কোর্সের মাধ্যমে ইউনিট লিডার তৈরী করে তাদের মাধ্যমে স্কাউটিং চালু করে ৪৭টি চার্টার বিতরণ করা হলো। প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসনকে শতভাগ বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে। বৃহত্তর ফরিদপুরের ৫টি জেলার মধ্যে গোয়ালন্দই প্রথম উপজেলা, যেখানে শতভাগ প্রতিষ্ঠানে স্কাউটিং কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হয়েছে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্কাউট উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আরিফা বেগম। অন্যান্যের মধ্যে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবিএম নুরুল ইসলাম, জেলা পরিষদের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি নুরুজ্জামান মিয়া, সাধারণ সম্পাদক ও দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মন্ডল, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম মাহাবুব রাব্বানী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নার্গিস পারভীন, স্কাউট ফরিদপুর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক লিয়াকত হোসেন, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।