॥শিহাবুর রহমান॥ রাজবাড়ী শহরের চরলক্ষীপুরে প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রবাসীর মেয়ে (১৬)কে ধর্ষণ ও ধর্ষণের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে এলাকার বখাটেদের মোবাইলে ছড়িয়ে দেয়ায় অভিযোগ উঠেছে।
অন্যের মোবাইলে নিজের ধর্ষণের ভিডিও দেখে লোকলজ্জা ও মানসম্মানের ভয়ে হারপিক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে ওই প্রবাসীর মেয়ে।
এ ঘটনায় রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে দায়েরকৃত মামলা গত ২৩শে সেপ্টেম্বর রাজবাড়ী থানায় রেকর্ড হয়েছে। এর আগে গত ৫ই সেপ্টেম্বর ওই প্রবাসীর স্ত্রী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। রাজবাড়ী থানার মামলা নং-৩৬, ধারাঃ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধনী/০৩) এর ৯(১)/৩০ তৎসহ পর্নোগ্রাফী আইন ২০১২ এর ৮(১)/৮(২)/৮(৩)/৮(৪)। মামলার আসামীরা হলো ঃ চরলক্ষীপুর এলাকার ইমরান শেখ(২২), ইবাদুল শেখ(২৫), আঃ রহমান শেখ(৪৮) ও তার স্ত্রী হাসি বেগম(৪০)।
মামলা সুত্রে প্রকাশ, প্রেমের ফাঁদে ফেলে ২০১৬ সালের ২০শে এপ্রিল বিকেলে একই এলাকার ইমরান শেখ(২২) সুকৌশলে ওই প্রবাসীর মেয়েকে বাড়ীতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে এবং সেই ধর্ষণের দৃশ্য সে মোবাইলে ধারণ করে। পরবর্তীতে ওই ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে ইমরান তাকে প্রায়ই ধর্ষণ করতো।
এ ঘটনার কিছুদিন পর ইমরান মালয়েশিয়ায় চলে যায়। সেখান থেকেও ইমরান ওই মেয়ের সাথে যোগাযোগ রাখতো। এক পর্যায়ে ইমরানের বড় ভাই ইবাদুল শেখ ধর্ষণের ওই ভিডিওটি সংগ্রহ করে ওই প্রবাসীর স্ত্রী’র কাছে ৫লক্ষ টাকা দাবী করে। আর তা না হলে সে ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়। অপরদিকে ইমরান মালয়েশিয়া থেকে ওই ভিডিও এলাকার বখাটেদের মোবাইলে পাঠিয়ে দেয়। এলাকার কিছু বখাটে ওই ভিডিও প্রবাসীর স্ত্রী ও তার মেয়ে এবং পরিবারের লোকজনকে দেখায়।
এ ঘটনার পর গত ৩০শে আগস্ট বিকেল ৩টার দিকে ওই প্রবাসীর স্ত্রী তার মেয়েকে নিয়ে ইমরানের বাড়ীতে গিয়ে তার বাবা মাকে বিষয়টি বললে তারা তাদেরকে তাড়িয়ে দেয়। বাড়ীতে এসে লোকলজ্জা ও মানসম্মানের ভয়ে ওই প্রবাসীর মেয়ে হারপিক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে তাৎক্ষনিকভাবে তাকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নেয়া হলে অবস্থা আশংকাজনক দেখে কর্তৃপক্ষ তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে। ফরিদপুর হাসপাতালে চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হলে তাকে বাড়ীতে নিয়ে আসা হয়।
এ ঘটনায় ওই প্রবাসীর স্ত্রী বাদী হয়ে ইমরান, ইবাদুল ও তার বাবা মাকে আসামী করে আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধনী/০৩) এর ৯(১)/৩০ তৎসহ পর্নোগ্রাফী আইন ২০১২ এর ৮(১)/৮(২)/৮(৩)/৮(৪) ধারায় মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি এফআইআরের নির্দেশ দিলে গত ২৩শে সেপ্টেম্বর রাজবাড়ী থানায় রেকর্ড হয়।
প্রবাসীর মেয়ের ধর্ষণের দৃশ্য ছড়িয়ে দেয়ায় অভিযোগে আদালতের মামলা থানায় রেকর্ড
