॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল ২৭শে সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ১১টায় ৪র্থ জাতীয় উন্নয়ন মেলা ও উন্নয়ন কনসার্ট সম্পর্কিত মতবিনিময় সভা কালেক্টরেটের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মোঃ আখতার হোসেন।
জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীর সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার, সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ রহিম বক্স, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রেবেকা খান, গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবু নাসার উদ্দিন, বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাসুম রেজা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এ সময় এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী খান এ শামীম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ ফজলুর রহমান, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক গোলাম মোঃ আজম, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রুবাইয়াত মোঃ ফেরদৌস, ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আমিনুল ইসলামসহ জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনারগণ, বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, এনজিও প্রতিনিধিগণসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মোঃ আখতার হোসেন বলেন, সরকারী সিদ্ধান্ত মোতাবেক আগামী ৪ঠা অক্টোবর থেকে ৬ই অক্টোবর পর্যন্ত সারা দেশের ন্যায় রাজবাড়ী জেলায়ও জাতীয় উন্নয়ন মেলা অনুষ্ঠিত হবে। এই উন্নয়ন মেলাকে সফল করতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক সচিব, অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রত্যেক জেলায় দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে আজকে আমি রাজবাড়ী জেলায় উন্নয়ন মেলা কিভাবে সুন্দর ও আকর্ষনীয় করা যায় সে বিষয়ে সকলের সাথে মতবিনিময়ের জন্য এসেছি। ‘উন্নয়নের অভিযাত্রায় অদম্য বাংলাদেশ’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবারের ৪র্থ জাতীয় উন্নয়ন মেলা অনুষ্ঠিত হবে। এই মেলা মূলতঃ কোন আনন্দ করার জন্য নয়। এই মেলার উদ্দেশ্য হচ্ছে সকল সরকারী, আধা সরকারী ও সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত প্রতিষ্ঠানসমূহ কি কি উন্নয়নমূলক কাজ করছে এবং এর মাধ্যমে জনগণ কিভাবে উপকৃত হচ্ছে সে বিষয়গুলো তাদের সামনে তুলে ধরা। যাতে জনগণ ও সরকারী অফিসের মধ্যে তথ্যের আদান-প্রদানের মাধ্যমে সেতৃবন্ধন তৈরী হয়। জনগণ যেন জানতে পারে কোন সরকারী অফিস কি সেবা প্রদান করছে। প্রত্যেকটি সরকারী বিভাগ কি কি কাজ করছে সেগুলো সামগ্রিকভাবে তুলে ধরতে তারা বিভিন্ন ধরনের ভিডিও ক্লিপ প্রদর্শন ও ছবি সম্বলিত লিফলেট বিতরণের ব্যবস্থা করতে পারে। বিশ্বের উন্নত দেশের সকল সরকারী কার্যক্রম বর্তমানে অনলাইনে পরিচালিত হয়। যেহেতু বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারের উপর সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব আরোপ করেছেন সেহেতু আমাদেরকে নিজেদের সকল কার্যক্রমে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে। আমরা অতীতে জাতিসংঘের এমডিজি কার্যক্রমের ২০টি গোলের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছি। বর্তমানে আমরা এসডিজির ১৭টি গোল বাস্তবায়নে অনেকটা অগ্রগতি সাধন করেছি। এর ফলে আমাদের মাথাপিছু আয়সহ জীবনযাত্রার মান অনেক উন্নত হয়েছে। যা বর্তমান বিশ্বসম্প্রদায়ের কাছে রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আর সেই জন্য বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশীরা জাতীয় উন্নয়ন মেলা পরিদর্শন করবেন। যাতে বিদেশীদের কাছে আমাদের সম্মান অটুট থাকে সে জন্য উন্নয়ন মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিটি বিভাগের স্টলে তাদের কার্যক্রম সাধারণ জনগণসহ বিদেশীদের কাছে তুলে ধরতে পারে এমন ধরনের কর্মকর্তাকে মেলা চলাকালীন সবসময় উপস্থিত রাখতে হবে। এ ছাড়াও মেলায় যে ৫টি বিষয়ের উপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে সে বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ যারা এসব বিষয়ে অভিজ্ঞ তাদের উল্লেখিত বিষয়ের উপর আলোচনায় অংশগ্রহণ করানোর মাধ্যমে জনগণের সামনে বিষয়গুলো তুলে ধরতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী বলেন, সারা দেশের ন্যায় আগামী ৪-৬ই অক্টোবর রাজবাড়ী শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ খুশি রেলওয়ে ময়দানে ৩ দিনব্যাপী জাতীয় উন্নয়ন মেলা অনুষ্ঠিত হবে। শুধু জেলা পর্যায়েই নয়, উপজেলা পর্যায়েও এই মেলার আয়োজন করা হবে। সেই লক্ষ্যে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ব্যবস্থাপনা কমিটি, উপ-কমিটি গঠন করাসহ সমন্বয় সভা করা হয়েছে। যদিও রাজবাড়ী জেলা বর্তমানে নদী ভাঙ্গন কবলিত তারপরও যেহেতু জাতীয় কর্মসূচী সেহেতু এই মেলা করা হবে। মেলায় বর্তমান সরকারের এসডিসি বাস্তবায়নের বিভিন্ন উদ্যোগ, রাজবাড়ী জেলায় পর্যটন শিল্পের বিকাশ, বর্তমান সরকারের বাস্তবায়িত ও বাস্তবায়নাধীন উন্নয়ন কর্মকান্ড, মুক্তিযুদ্ধ, জেলার বিভিন্ন সরকারী দপ্তর যে সকল সুবিধা প্রদান করে সে সকল বিষয় জনগণের সামনে তুলে ধরা হবে। এ ছাড়াও বর্তমান সরকার বিভিন্ন সেক্টরে যে সকল সাফল্য অর্জন করেছে ও যে সকল সরকারী সুবিধা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে এবং তাতে সাধারণ মানুষ কিভাবে উপকৃত হচ্ছে সে সব বিষয় বিভিন্ন সরকারী বিভাগ তাদের সে সকল বিষয় মেলায় তুলে ধরবে। তিনি উন্নয়ন মেলা যাতে সফল করা যায় সে বিষয়ে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
উল্লেখ্য, এবারের মেলায় প্রায় ৮০টি স্টল থাকবে। যার মধ্যে বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের স্টল ছাড়াও বেসরকারী বিভিন্ন বিভাগের স্টল ও খাবারের স্টল থাকবে।