॥মাহফুজুর রহমান॥ আমার আম্মুকে আব্বু, ফুফু, দাদীরা ফিরা দিয়া মাইরা বিষ খাওয়াইয়া মাইরা হাসপাতালে ভর্তি করছিলো। আমি আম্মুর কাছে যাবো। আমি কিছুই খাবো না। আমার আম্মু কই? এভাবে আহাজারি করছে স্বামীর নির্যাতনে নিহত দুই সন্তানের জননী আঁখি খাতুনের দুই বছরের মেয়ে রত্মা।
আঁখি খাতুন(২৫) গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ দৌলতদিয়া যদু ফকীর পাড়া এলাকার মৃত কলিমুদ্দিন সরদারের ছেলে রহিম সরদারের স্ত্রী ছিল।
নিহত আঁখি খাতুনের পরিবারের দাবী, আঁখির স্বামী রহিম সরদার ও তার পরিবারের নির্যাতনে সে মারা গেছে। তাকে মারপিট করে পরে বিষপান করিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে রহিমসহ পরিবারে সকলে পলাতক রয়েছে। নিহত রত্মার বড় মেয়ের নাম রত্মা(২) ও ছেলে আরাফাতের বয়স দেড় বছর। রত্মা বর্তমানে তার নানা বাড়ীতে রয়েছে। আর ছেলেটি তার দাদা বাড়ীতে রয়েছে।
রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর ইউনিয়নের সরদার পাড়া গ্রামের ফজলু শেখে মেয়ে দুই সন্তানের জননী আঁখি খাতুনকে গত ৩রা সেপ্টেম্বর বিষপানের কথা বলে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পাকস্থলী ওয়াশ করার পর তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরদিন ৪ঠা সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। ফরিদপুরের পুলিশ নিহতের লাশের ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। সেখানে ময়না তদন্ত শেষে বুধবার সন্ধ্যায় লাশ বাবার বাড়ীতে নিয়ে আসা হয়।
জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর আগে আঁখি খাতুনের বিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য তাকে মারপিট করতো স্বামী মাহেন্দ্র চালক রহিম সরদার। নির্যাতন সইতে না পেরে নিহত আঁখি খাতুন বার বার স্বামীর বাড়ী থেকে বাবার বাড়ীতে চলে আসতো।
নিহত আঁখির মা জরিনা বেগম ও বাবা ফজলু শেখ বলেন, আঁখিকে বিয়ে দেয়ার পর থেকে দশ হাজার, বিশ হাজার করে কয়েক বার টাকা দিয়েছি। শেষ পর্যন্ত মেয়ের জামাই রহিম সরদারকে মাহেন্দ্র গাড়ী কেনার জন্য ২লক্ষ টাকাও দিয়েছি। এতো কিছুর পরও মেয়েকে বাঁচাতে পারলাম না। লাশ হয়ে তাকে ফিরতে হলো।
দক্ষিণ দৌলতদিয়ায় শ্বশুর বাড়ীর নির্যাতনে লাশ হয়ে পিতার বাড়ী ফিরল দুই সন্তানের জননী আঁখি

SONY DSC