Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

পারিবারিক বিরোধে নবম শ্রেণীতে ভর্তি হতে পারছেনা এক ছাত্রী!

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার মূলঘর উচ্চ বিদ্যালয়ের জেএসসি পাশ এক ছাত্রী পূর্বের পারিবারিক বিরোধের জের ধরে নবম শ্রেণীতে ভর্তি হতে পারছে না। ভর্তি হতে না পেরে ওই ছাত্রী ও তার পরিবার দুশ্চিন্তায় রয়েছে। এতে পড়াশুনা মারাতœকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে গেলে প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জোরপূর্বক ছাত্রীর স্বাক্ষর নিয়ে হাতে প্রশংসা পত্র দিয়ে দেয়। এ নিয়ে শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সভাপতির কাছে আইনজীবির মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করেন। অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি দাবী করেন, বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করবেনা বলে ওই ছাত্রী ও তার মা প্রশংসাপত্র নিয়ে যায়।
ছাত্রীর বাবা রাজবাড়ী সদর উপজেলার মূলঘর ইউপির পারদর্পনারায়নপুর গ্রামের আসাদুজ্জামানের পক্ষে আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক(২) গত ৫ই জানুয়ারী স্বাক্ষরিত প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যায়ল পরিচালনা কমিটির সভাপতির কাছে পাঠানো লিগ্যাল নোটিশে অভিযোগ করেন, গত বছর জেএসসি পরীক্ষায় মক্কেলের(আসাদুজ্জামান) মেয়ে মেঘলা আক্তার সিমলা কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়। যার রোল নং-রাজঃ ৪২৮৭০৯, রেজিঃ নং-১৬১০৫৫৩৭২৮। উক্ত বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী সংসদেও মেঘলা বিপুল ভোটে জয়ী হয়। তা সত্ত্বেও উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতির সাথে যোগসাজসে অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে ও বেআইনীভাবে গত ২ ও ৪ঠা জানুয়ারী মেঘলাকে নিয়ে তার মা রাহেলা বেগম ভর্তি করাতে গেলে তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করে ভর্তি করবেননা বলে জানিয়ে দিয়ে জেএসসি পাশের প্রশাংসা পত্র হাতে প্রদান করেন। অত্র লিগ্যাল নোটিশের মাধ্যমে অনুরোধ করা যাচ্ছে লিগ্যাল নোটিশ প্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে মেঘলা আক্তার সিমলাকে ভর্তির সুযোগ দিবেন। অন্যাথায় শিকষা গ্রহনের অধিকার ও ভর্তির অধিকার খর্ব করাসহ মোয়াক্কেলের স্ত্রীর সাথে দুর্ব্যবহারের জন্য আপনার বিরুদ্ধে দেওয়ানী ও ফৌজদারী মামলা করা হবে। যার ব্যয় ভারও আপনাকে বহন করতে হবে।
আসাদুজ্জামান অভিযোগ করেন, লিগ্যাল নোটিশ পাঠানোর এত দিন পরও আমার মেয়েকে ভর্তি করেনি। ভর্তির সময় প্রায় শেষ হয়ে যাওয়ায় পড়াশুনা করানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। তিনি আরো বলেন, তুচ্ছ একটি বিষয় নিয়ে গত বছর আগষ্ট মাসে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমার ছেলে সবুজকে মারধর করে। এমনকি গত ২২শে আগস্ট আমার ছেলে ও আমাকে আসামী করে রাজবাড়ী সদর থানায় একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। এর খেসারত হিসেবে আমার মেয়েকে তারা বিদ্যালয়ে ভর্তি করছেননা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন মোল্যা গতকাল সোমবার অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, আসাদুজ্জামানের ছেলে আমার কাছে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। টাকা না দেওয়ায় গত ২২শে আগস্ট বিদ্যালয় থেকে বাড়ি যাবার পথে মূলঘর পারশাদীপুর এলাকায় সবুজসহ ৭/৮জন আমাকে মারধর করে কাছে থাকা এক লাখ টাকা নিয়ে যায়। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।
ভর্তি না করা প্রসঙ্গে বলেন, ১৫/১৬দিন আগে মেঘলাকে সাথে নিয়ে তার মা বিদ্যালয়ে রাখবেনা বলে প্রশংসাপত্র চাই। পরে পরিচালনা কমিটির সভাপতিসহ অন্যদের উপস্থিতিতে ছাত্রী নিজে স্বাক্ষর করে প্রশংসাপত্র নিয়ে যায়। আমরা লিগ্যাল নোটিশের জবাব দিয়েছি
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ আলী মুন্সী জানান, ছাত্রীর ভাইয়ের সাথে প্রধান শিক্ষকের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখানে পড়াশুনা করবেনা বলে বিদ্যালয় থেকে প্রশংসাপত্র চেয়ে নিয়ে যায়। আমাদের এখানে তাদের প্রতি আক্রোশের কোন বিষয় নেই। বরং আমাদের বিরুদ্ধে তারা বানোয়াট মিথ্যা অভিযোগ করছে।