Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

রাজবাড়ীতে ছাত্রীদের যৌন হয়রানীকারী দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় ক্ষোভ প্রকাশ

॥দেবাশীষ বিশ্বাস॥ রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল ১৫ই জুলাই সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীর সভাপতিত্বে সভায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার, সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ রহিম বক্স, রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডঃ এম.এ খালেক, বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়াম্যান মোঃ আবুল কালাম আজাদ, কালুখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) রেবেকা খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশেক হাসান, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী খান এ শামীম, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রকাশ কৃষ্ণ সরকার, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাঈদুজ্জামান, বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাসুম রেজা, কালুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ তোফায়েল আহমেদ, পাংশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রুবাইয়াত মোঃ ফেরদৌস, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ ফজলুর হক, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ আবু বকর সিদ্দিক, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ মজিনুর রহমান, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসনে আরা করিমী, ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আমিনুল হক, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মোঃ কামরুল ইসলাম গোলদার ও জেলা তথ্য অফিসার মোঃ মোক্তার হোসেন মল্লিক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সভায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সভাপতি ও পিটিআই’র পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোঃ হাবিবুর রহমান মোল্লা ওরফে হবি এবং বার্থা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অসীম কুমার দাস কর্তৃক নিজ বিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীর যৌন হয়বারিয়ন বিচার না হওয়ায় ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার রহস্যজনক ভূমিকার কারণে এই দুই শিক্ষক পার পেয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসনে ইয়াসমিন করিমীকে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীও ফোনে পান না বলে অভিযোগ করেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান।
এ সময় জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী প্রশ্ন রেখে বলেন, শুধুমাত্র চিঠি চালাচালি করে এবং আত্মভয়ের কারণেই কি এই গুরুতর অভিযোগের কোন বিচার হচ্ছে না? নাকি এর পিছনে অন্য কোন কারণ রয়েছে। আপনি কিন্তু উল্টা পথে চলছেন বলে জেলা প্রথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন জেলা প্রশাসক।
জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী আরো বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে রাজবাড়ীর মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং পিটিআই’র সুপারের মধ্যে চিঠি চালাচালির অসামঞ্জস্যতা নিয়ে পিটিআই’র সুপারকে উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভার আসার কথা বললেও তিনি সেখানে না আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করে জেলা প্রশাসক বলেন, প্রথম ঘটনার বিচার হলে দ্বিতীয় ঘটনাটি রাজবাড়ীতে নাও ঘটতে পারতো। ভবিষ্যতে রাজবাড়ী এ ধরনের কোন ঘটনা নিয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হলে তার দায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকেই নিতে হবে।
এছাড়াও জেলা প্রশাসক তার বক্তব্যে রাজবাড়ীর বিদ্যুৎ পরিস্থিতি, একটি বাড়ী একটি খামার প্রকল্পের অগ্রগতি, সদ্য অনুষ্ঠিত ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের সফলতাসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন।
বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, জেলা পরিষদের মাত্র একজন ইঞ্জিনিয়ার দিয়ে তত্বাবধান করায় ৫টি উপজেলার কোথাও কাজের মান ভালো হচ্ছে না। প্রকল্পের কাজ মানসম্মত না হওয়ায় সরকারের কোটি কোটি টাকা নষ্ট হচ্ছে।
এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, আগামী মাসে রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার গড়াই নদীর উপর ৫৫০ মিটার সেতুর টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। এছাড়াও আগামী মাসের শেষের দিকে ২টি উপজেলায় ২টি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স উদ্বোধন করা হবে বলে সভায় জানানো হয়।