॥স্টাফ রিপোর্টার॥ বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় অবসরপ্রাপ্ত এক পুলিশ অফিসারের মেয়েকে অপহরণ ও গণধর্ষণের পর অন্যত্র বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে আদালতে দায়েরকৃত মামলা গত ২৫শে জুন রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি থানায় রেকর্ড হয়েছে।
বালিয়াকান্দি থানার মামলা নং-১০, ধারাঃ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধনী/০৩) এর ৭/৯(১)/৩০। মামলার আসামীরা হলো ঃ মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার বরালদা গ্রামের ছালেক মোল্লা, স্ত্রী আনু বেগম, ছেলে আশরাফ মোল্লা, মনিরুল মোল্লা ও রেজাউল মোল্লা।
মামলা সুত্রে জানাযায়, ওই পুলিশ অফিসার কোন এক সময় রাজবাড়ী থানায় চাকুরী করেছেন। রাজবাড়ীতে চাকুরী করা অবস্থায় ২০০০ সালে তার ওই জন্ম গ্রহণ করে। তার ওই মেয়ে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত রাজবাড়ী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে। এরপর তার বদলী জনিতকারণে তিনি তার মেয়েকে নিজ গ্রাম ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার জগন্নাথদিয়ায় নিয়ে যান এবং নলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করেন। ওই স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করার পর ২০১৮ সালে সে জামালপুর কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দেয়। তার পরীক্ষার সিট পড়ে বালিয়াকান্দি কলেজ কেন্দ্রে। পরীক্ষার ২মাস আগে ছালেক মোল্লা ও আনু বেগম বিদেশে অবস্থানরত ছেলে জন্য তার মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু তাদের চরিত্র ও অবস্থান ভাল না থাকাই তিনি বিয়ের প্রস্তাব নাকচ করে দেন। এরপর থেকে তারা তার ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে ওই পুলিশ অফিসার তার মেয়েকে সাথে নিয়ে কেন্দ্রে আসতেন। কিন্তু শেষ পরীক্ষার দিন অথ্যাৎ গত ১৩ই মে অসুস্থ থাকায় তিনি মেয়ের সাথে কেন্দ্রে আসতে পারেননি। সে কারণে তার মেয়ে এক বান্ধবীর সাথে পরীক্ষা দিতে আসে। কিন্তু পরীক্ষা শেষে সে বাড়ী ফিরে না গেলে তিনি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। পরে খোঁজ নিয়ে বরালদা গ্রামের লোকজনের কাছ থেকে জানতে পারেন তার মেয়েকে ওই দিন উল্লেখিতদের সাথে অজ্ঞান অবস্থায় যেতে দেখেছেন। তারা এও বলেন তার মেয়েকে ওই দিন রাতভর পর্যায়ক্রমে আশরাফ মোল্লা, মনিরুল মোল্লা ও রেজাউল মোল্লা ধর্ষণ করে। তবে তারা পরদিন থেকে ওই বাড়ীতে তাকে আর দেখেননি। এ খবর জানতে পেরে ওই পুলিশ অফিসার বরালদা গ্রামে ছালেক মোল্লার বাড়ীতে গিয়ে তার মেয়ে কোথায় জানতে চান। এ সময় ছালেক তাকে বলেন তোর মেয়েকে দিবালোকে আমার বাড়ীতে এনে ঢাকায় এক দালালের কাছে বিক্রি করে দিয়েছি। তুই বুড়া ঢাকায় গিয়ে দ্যাখ তোর মেয়ে দেহ ব্যবসা করছে। এভাবে তাকে অপমান করে বাড়ী থেকে বের করে দেয় এবং মেয়ের কোন খবর না পেয়ে তিনি ফিরে আসেন।
মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়, এ ঘটনার পর তিনি মাগুরা থানায় গিয়ে নিজের পরিচয় দিয়ে মামলা করতে যান। কিন্তু থানা কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি বালিয়াকান্দির মধ্যে বলে তাকে ওই থানায় মামলা করার পরামর্শ দেন। এরপর তিনি বালিয়াকান্দি থানায় গেলে সেখানেও এরুপ কথাবার্তা বলায় গত ৭ই জুন রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলাটি দায়ের করেন।
আদালত মামলাটি বালিয়াকান্দি থানায় এফআইআর হিসেবে রেকর্ড করার জন্য নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে মামলাটি গত ২৫শে জুন থানায় রেকর্ড হয়। এ খবর লেখা পর্যন্ত কোন আসামী গ্রেফতার হয়নি।
অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তার মেয়েকে অপহরণের পর গণধর্ষণের অভিযোগ॥আদালতের নির্দেশে বালিয়াকান্দি থানায় মামলা রেকর্ড
