॥শিহাবুর রহমান॥ রাজবাড়ী জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বারের দায়িত্ব গ্রহণ উপলক্ষে গতকাল ১৬ই জানুয়ারী শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে বেলা ১১টায় রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলীর নেতৃত্বে পায়ে হেঁটে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দসহ শোভাযাত্রা শহরের প্রধান সড়ক ধরে জেলা পরিষদে পৌঁছায়।
সেখানে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল কাইয়ুমের নেতৃত্বে জেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ ফুলের তোড়া দিয়ে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানকে বরণ করে নেন।
র্যালীতে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ কামরুন্নাহার চৌধুরী লাভলী, রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী, পাংশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফরিদ হাসান ওদুদ, বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, কালুখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী সাইফুল ইসলাম, গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবিএম নুরুল ইসলাম, পাংশা পৌরসভার মেয়র আব্দুল আল মাসুদ বিশ্বাস, জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্যগণ, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌর কাউন্সিলরগণ, ইউপি সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, জেলা, উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন ও সহযোগী সংগঠনসহ সহ¯্রাধিক নেতাকর্মীগণ। এ সময় জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ আগতদের গরম চা এবং বিস্কুট দিয়ে আপ্যায়িত করা হয়।
পরে জেলা পরিষদের হল রুমে জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকীর আব্দুল জব্বারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম, সাধারণ সম্পাদক ও রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কামরুন নাহার চৌধুরী লাভলী, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুম, পৌর মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী, বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, বানীবহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ গোলাম মোস্তফা বাচ্চু ও জেলা পরিষদের নব নির্বাচিত সদস্য ও গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ নুরুজ্জামান মিয়া বক্তব্য রাখেন।
সভায় রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম বলেন, আমরা জেলা পরিষদে যে পরিবর্তন চেয়েছিলাম তা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বাস্তবায়ন হয়েছে। আসলে রাজনীতিটা কঠিন জিনিস। এখানে উত্থান যেমন সহজ। আবার পতনও তেমন সহজ। উত্থান বজায় রাখতে হলে ব্যবহার, আচার আচরণ দিয়ে টিকিয়ে রাখতে হবে। যার যে সম্মান তাকে সেটা দিতে হবে। নেত্রীকে ধন্যবাদ জানাই এমন লোককে তিনি বেছে নিয়েছেন যার মধ্যে রাজনীতি আছে। আমরা সুসম উন্নয়ন চাই। আমরা ভাল ব্যবহারটা চাই। এর আগে যেটা হয়েছে সেটার পুনরাবৃত্তি করতে চাইনা। আশা করি নতুন চেয়ারম্যান যিনি এসেছেন তিনি সুন্দর আন্তরিকতার পরিচয় দিয়ে জেলা পরিষদ পরিচালনা করবেন। আমরা সবাই একসাথে কাজ করে রাজবাড়ী জেলাকে একটি সুন্দর মডেল জেলা হিসেবে গড়তে চাই।
রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী বলেন, ২০১৯ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে জয়লাভ ছাড়া আওয়ামী লীগের কোন বিকল্প নাই। আমাদের নেত্রী বলেছেন আবারো ক্ষমতায় আসতে হবে। সেজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হতে। শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।
সংসদ সদস্য কামরুন নাহার চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনার সাফল্যের কথা বলে শেষ করা যাবে না। আজ দেশে কোন হাহাকার নেই। বাড়তি নেই চালের দাম। নেই পড়াশুনার সমস্যা। সবদিক দিয়ে উন্নয়ন হচ্ছে। সরকারী কর্মচারীদের বেতন দ্বিগুন করেছেন। এই কৃতজ্ঞতা বাঙালী জাতি কিভাবে দেবে তার ভাষা নেই। আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আবার আমাদেরকে ক্ষমতায় আসতে হবে।
রাজবাড়ী পৌর মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী বলেন, যেদিন প্রধানমন্ত্রী রাজবাড়ী জেলা পরিষদের মনোনয়ন দিয়েছিলেন সেদিন দলমত নির্বিশেষে সবাই খুশি হয়েছিলেন। সবাই বলেছিলেন যোগ্য লোককে শেখ হাসিনা মনোনীত করেছেন। আমরা যদি মিলেমিশে কাজ করি তাহলে শেখ হাসিনার যে চাওয়ার বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়ন হবে।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকীর আব্দুল জব্বার বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আমরা রাজবাড়ীবাসী ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো। সকল ভেদাভেদ ভুলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে উন্নয়ন করছে তা আরো বেগবান করে দেশকে ও দেশের মানুষকে স্বাবলম্বী করতে নিরলসভাবে কাজ করবো। তিনি বর্তমান সরকারের সাফল্য তুলে ধরে বলেন, কোন সরকারই শেখ হাসিনার সরকারের মতো উন্নয়ন করতে পারে নাই। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়ন করবো।
তিনি জেলা পরিষদ পরিচালনায় সকলের সহযোগিতা নিয়ে জেলাবাসীর মুখ উজ্জল করতে যা যা করণীয় তিনি তা করবেন বলে জানান। তিনি জেলাবাসীর জন্য জীবন বাজী রেখে দায়িত্ব পালনের আশ্বাস প্রদান করেন।
এছাড়াও তিনি শেখ হাসিনার নির্দেশে রাজবাড়ীর সকল জনপ্রতিনিধিসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজ ও বিশিষ্ট জনদের মতামত নিয়ে দায়িত্ব পালন করবেন বলে প্রতিশ্রতি দেন। সভা শেষে সকলকে মিষ্টিমুখ করিয়ে সভা সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।