Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

শেষ মুহুর্তের ঈদ বাজার॥রাজবাড়ীর তৈরী পোশাকের দোকানে ভিড়

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ পবিত্র ঈদুল ফিতরের বাকি আর মাত্র ১দিন। শেষ মুহূর্তে তাই জমে উঠেছে রাজবাড়ীর ঈদ বাজার। জেলা শহরের বিপণী বিতানগুলো থেকে শুরু করে ৫টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মার্কেটগুলোতে বেচাকেনার ধুম পড়েছে। পছন্দসই পোশাক কেনার জন্য তরুণ-তরুণী, শিশু-কিশোরসহ সব বয়সী মানুষ ছুটছেন এক দোকান থেকে অন্য দোকানে।
শেষ মুহূর্তে রেডিমেড বা তৈরী পোশাকের দোকানগুলোতে দেখা যাচ্ছে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভীড়। এদিকে নিম্ন আয়ের ক্রেতারা বিভিন্ন হকার মার্কেট ও ফুটপাতের দোকানগুলোতে ভীড় জমাচ্ছেন বেশী। পোশাকের সাথে মিল রেখে কসমেটিকসের দোকাগুলোতে ভীড় করেছে তরুণীরা। অন্যদিকে ঈদ উপলক্ষে এখন ব্যস্ততার শেষ নেই দর্জির দোকানগুলোতেও। শেষ সময়ে বেশীরভাগ দর্জির দোকানে নতুন করে কোন অর্ডার নেয়া হচ্ছে না। আগে নেয়া কাজগুলো শেষ করার চেষ্টা করছেন তারা। কোন রকম ফুসরত মিলছে না তাদের। যেভাবেই হোক ঈদের আগে সব জমানো কাজ শেষ করতে হবে।
তৈরী পোশাকের মধ্যে মেয়েদের গাউন, দোপাট্টা, লেহেঙ্গা, প্লাজুসেট ও থ্রি-পিচ বেশী বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। পাশাপাশি ছেলেরা ঝুঁকেছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পাঞ্জাবী, ফরমাল শার্ট, টি-শার্ট, ফিটিং শার্ট, নিত্য নতুন ডিজাইনের জিন্স, গেবার্ডিন প্যান্ট, বেল্ট, জুতা ও বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানীর পারফিউমের প্রতি। মার্কেটগুলোতে দেশী পোশাকের পাশাপাশি ভারতীয় পোশাকের সমারোহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
জেলা সদর ছাড়াও ৪টি উপজেলা শহর ও গ্রামগঞ্জের মার্কেটগুলোতেও উপচেপড়া ভীড় দেখা গেছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শহরের সব মার্কেট, ফ্যাশন হাউস ও বিপণিবিতানগুলো ক্রেতাদের সমাগমে মুখর থাকছে। বাহারী আর নতুন ডিজাইনের পোশাকের পসরা সাজিয়ে দোকানীরা ক্রেতাদের আকর্ষণ করছে।
রাজবাড়ী বড় বাজারের কাদেরীয়া সুপার মার্কেটের এসবি ফ্যাশনের বিক্রয়কর্মী মোঃ আলম বলেন, গত বছর ঈদের তুলনায় এবার বেশ ভালোই বিক্রি চলছে। রমজানের শেষের দিকে ভীড় কিছুটা বেশী। তাই বিক্রিতে কোনও ক্লান্তি নেই, গভীর রাত পর্যন্ত আমরা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখছি।
আকাশ ফ্যাশনের মালিক আয়েশা বেগম বলেন, আমাদের কাছে বাংলাদেশী ও ভারতীয় পোশাক রয়েছে। তবে এবার ঈদে রাজবাড়ীতে ভারতীয় গাউন ও দোপাট্টা বেশী বিক্রি হচ্ছে। থ্রি-পিচের চাহিদা খুব একটা নেই। দুই হাজার থেকে শুরু করে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন দামের গাউন রয়েছে। মেয়েদের পছন্দের শীর্ষে এবার গাউন।
একদর নিউ ভবাণী বস্ত্রালয়ের মালিক নকুল চন্দ্র সাহা বলেন, এবার ঈদটা গরমের সময়ে হচ্ছে বলে টাঙ্গাইলের তাঁতের সুতি শাড়ী বেশী বিক্রি হচ্ছে। তাদের কাছে ৭শ’ টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত মূল্যের শাড়ী রয়েছে। ১৫শ টাকা থেকে দুই হাজার টাকার মধ্যকার শাড়ীই বেশী বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি কিছু কাতান, বেনারশি, জামদানী শাড়ী বিক্রি হচ্ছে।
ঈদের কাপড় কিনতে আসা ক্রেতা রেশমি সুলতানা বলেন, প্রতিবারই ঈদে নিত্যনতুন পোশাক আসে। এবার দেখছি গাউনের চাহিদাটা একটু বেশী। দাম মোটামুটি সাধ্যের মধ্যে রয়েছে। আমি একটি ভারতীয় গাউন কিনেছি দুই হাজার টাকা দিয়ে। ঈদ বাজার ঘুরে দেখলাম ভারতীয় বিভিন্ন সিরিয়াল ও ছবির নাম অনুসারেও পোশাক পাওয়া যাচ্ছে।
রাজবাড়ী কাপড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক মোঃ জাকির হোসেন জানান, রাজবাড়ী শহরে ঘন ঘন লোডশেডিং ও বাজার এলাকায় যানজটের কারণে প্রচন্ড গরমে ক্রেতাদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। অন্তত ঈদের এই কয়েকটি দিন লোডশেডিংয়ের মাত্রা কমিয়ে আনা হলে ক্রেতারা স্বস্তিতে কেনাকাটা করতে পারতো।
রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী জানান, রমজান ও ঈদকে ঘিরে বাজারে যেন সবকিছুর দাম নিয়ন্ত্রণে থাকে তার জন্য সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এরপরও যদি কারও বিরুদ্ধে দাম বেশী নেয়ার অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।