॥কাজী তানভীর মাহমুদ॥ রাজবাড়ীর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের গোয়ালন্দ মোড় থেকে পাংশার শিয়ালডাঙ্গী পর্যন্ত উন্নয়ন কাজের ৪টি ধাপের মধ্যে ২টি ধাপের কাজ শুরু হয়েছে। তবে ধীর গতিতে কাজ চলায় এ রুটের যানবাহন চালক ও যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।
রাস্তা সম্প্রসারণে খুঁড়াখুড়ি ও ধুলাবালিতে মহাসড়কের পাশের দোকানী-ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ভোগান্তির পাশাপাশি যানবাহন চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে। আসন্ন ঈদে এ সড়কে যানবাহন চলাচলে চরম দুভোর্গের আশংকা করছে সংশ্লিষ্টরা। তবে এলাকাবাসীর দাবী উঠেছে ঈদের আগে সম্ভব না হলেও বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই মহাসড়কটি চলাচল উপযোগী করে তোলার। তা না হলে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিতে উন্নয়ন কাজ ব্যাহত হবে। সেই সঙ্গে দুর্ভোগের সীমা ছাড়িয়ে যাবে।
রাজবাড়ী সড়ক ও জনপথ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গোয়ালন্দ মোড় থেকে পাংশার শিয়ালডাঙ্গী পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়কটি প্রশস্ত ও উন্নতকরণ প্রকল্পের আওতায় রাজবাড়ী সড়ক বিভাগের অধীনে ৪টি ধাপে ৩৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে। ৪টি ধাপের মধ্যে ২টি ধাপের কাজ চলছে। যা দেড় বছরের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে। যার প্রথম অংশ গোয়ালন্দ মোড় থেকে শ্রীপুর জেলা পরিষদ কার্যালয় পর্যন্ত রাস্তা প্রশস্ত ও দুই লেনে উন্নীতকরণের কাজ শুরু হয়েছে।
বর্তমানে এর কাজ অনেকটাই দৃশ্যমান এবং সড়ক বিভাগের দাবী, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে ৪০ শতাংশের বেশী কাজ সম্পন্ন করেছে।
অপরদিকে, দ্বিতীয় ধাপে শ্রীপুর জেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনে থেকে চর বাগমারা তালতলা পর্যন্ত রাস্তাটি ফোর লেনে উন্নীত করার কাজ শুরু হলেও সড়ক বিভাগ ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দাবী, রাস্তার নিচে পানি ও টেলিফোনসহ বিভিন্ন লাইন থাকায় উন্নয়ন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। তবুও দ্রুত কাজ করার চেষ্টা চলছে। এটির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন লিঃ।
অন্যদিকে তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপের কাজ একই সঙ্গে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের চরমাগমারা তালতলা থেকে পাংশার শিয়ালডাঙ্গী পর্যন্ত রাস্তা ও বাগমারা থেকে জৌকুড়া ধাওয়াপাড়া ঘাট পর্যন্ত রাস্তাটি প্রশস্ত ও দুই লেনে উন্নীতকরণের কাজ শুরুর অপেক্ষায় রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও সড়কের পাশে থাকা ব্যবসায়ীরা জানান, রাস্তার উন্নয়নের যে কাজ হচ্ছে তা খুবই ধীর গতিতে। এতে ধুলাবালির কারণে হাঁটা-চলা ও ব্যবসা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। বৃষ্টি পুরোদমে শুরু হলেতো কাজ বন্ধ থাকবে, তখন আরও সমস্যা হবে। তাই বর্ষার মৌসুম শুরুর আগেই রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী করলে সকলের জন্য ভালো হবে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন লিঃ-এর প্রকৌশলী মীর্জা বেগ জানান, পবিত্র ঈদুল ফিতরে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সড়ক পথে সহজে মানুষ যাতে ঘরে ফিরতে পারে সে জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে। সড়কটির কাজে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় প্রতিনিধি মোঃ আজিজুল ইসলাম বাবু জানান, ইতোমধ্যে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাথে কথা বলে সড়কের পাশে থাকা গাছ, টেলিফোন বিভাগের সাথে কথা বলে তাদের উপর ও নিচের টেলিফোনের তার, পৌরসভার পানির লাইন, বিদ্যুৎ বিভাগের খুঁটি ও তার সরিয়ে কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
রাজবাড়ী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কে.বি.এম সাদ্দাম হোসেন জানান, রাজবাড়ী সড়ক বিভাগের অধীনে ৪টি প্যাকেজে ৩৯৫ কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে। যার ৪টি প্যাকেজের মধ্যে ২টি প্যাকেজের কাজ চলছে। বর্ষার আগে কাজের গতি আরও বাড়ানো হবে। যথাযথ সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার চেষ্টা চলছে। কাজের ধীর গতি তেমন একটা নেই। গুণগত মান বজায় রেখে কাজ করা হচ্ছে। সর্বোচ্চ গতিতে যেন কাজ চলে সেদিকে খেয়াল রাখা হয়েছে।