Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

রাজবাড়ী জেলায় পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধসহ অধিক লোডের ট্রাক চলাচল রোধে ডিসি-এসপিকে প্রতিমন্ত্রী-এমপির নির্দেশ

# বৈশাখী মেলার নামে রমরমা লটারী এবং অবৈধ ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত #

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল ১৩ই মে সকাল ১০টায় জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা কালেক্টরেটের সম্মেলন কক্ষে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় কমিটির উপদেষ্টা শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী, রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ জিল্লুল হাকিম ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কামরুন নাহার চৌধুরী লাভলী বক্তব্য রাখেন।
সভায় পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাকিব খান, সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ রহিম বক্স্, রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডঃ এম.এ খালেক, গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবিএম নুরুল ইসলাম, বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আবুল কালাম আজাদ, জেলা বার এসোসিয়েশনের সম্পাদক খোন্দকার হাবিবুর রহমান বাচ্চু, জেলা জাসদের(ইনু) সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ নিজাম মন্টু, জেলা জাসদের(আম্বিয়া) আহ্বায়ক স্বপন কুমার দাস, জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হাসান মৃধা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ ছাদেকুর রহমান, গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই’র উপ-পরিচালক মোঃ জিল্লুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ, বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী,এমপি তার বক্তব্যে বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বে কিছুদিন আগে আমরা সমুদ্র জয় করেছি। এই সমুদ্র জয়ের পর আরও একবার তার সফল পদক্ষেপের জন্য আজকে আমরা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ প্রেরণের মাধ্যমে মহাকাশ জয় করেছি। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ আরও একবার বিশ্বের বুকে উন্নয়নের রোল মডেল রাষ্ট্র হিসেবে তুলে ধরাসহ দেশের সকল জনগণকে তিনি এক অবিস্মরণীয় সম্মান এনে দিয়েছেন। তার এই পদক্ষেপের জন্য আমরা রাজবাড়ী জেলাবাসীর পক্ষ থেকে তাকে ধন্যবাদ জানাই। সেই সাথে আসন্ন রমজান মাস উপলক্ষে আমি রাজবাড়ীবাসীকে অগ্রিম শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমাদের রাজবাড়ী শহরে বাজারে যাওয়ার প্রধান সড়ক একটাই। এই সড়ক যানজটমুক্ত রাখা আমাদের সকলের দায়িত্ব। কিন্তু প্রতিনিয়ত বাজারে গেলে দেখা যায়, ১নং রেলগেটে অটোরিক্সার কারণে ও বাজারের ভিতরে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধিসহ অন্যদের মোটর সাইকেল এলোমেলোভাবে রাখার কারণে বাজারে আসা লোকজন যানজটের কবলে পড়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। রাজবাড়ী পৌরসভা ও জেলা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগকে এই যানজট নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, রাজবাড়ী সদর উপজেলার অন্তারমোড়ে বিভিন্ন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের দ্বারা সাধারণ মানুষ প্রায়শই অত্যাচারিত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ওই এলাকায় পুলিশী টহল বাড়ানোসহ সন্ত্রাসীদের ধরতে পুলিশকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
তিনি রাজবাড়ী থেকে দৌলতদিয়া পর্যন্ত জাতীয় মহাসড়কে কোন অবস্থাতেই মাহেন্দ্র চালানোর অনুমতি না দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ এবং অনেক ক্ষেত্রে মাহেন্দ্র চালকরা রাতে বেশী ভাড়া আদায় করে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, আসন্ন রমজান মাসকে সামনে রেখে বাজারে যাতে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি না পায় সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করাসহ কোন ব্যবসায়ী যাতে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করতে না পারে সেদিকে প্রশাসনকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
রাজবাড়ী শহরের বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ খুশি রেলওয়ে ময়দানে বৈশাখী মেলায় রমরমা লটারী চালানোর ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শহরের কেন্দ্রস্থলে মেলার নামে লটারীর অনুমতি কিভাবে দেয়া হলো এবং কিভাবে প্রতিদিন ৩টি মোটর সাইকেল, ৫ভড়ি স্বর্ণ, টিভি, ফ্রিজ, মোবাইলসহ অসংখ্য পুরস্কারের লোভনীয় অফার দেয়ার মাধ্যমে এই লটারীর টিকেট জেলার বিভিন্ন জায়গায় শতাধিক অটোরিক্সা মাধ্যমে মাইকে প্রচার করে বিক্রি করা হচ্ছে এবং স্থানীয় ক্যাবল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সরাসরি এই লটারী সম্প্রচার করা হচ্ছে? মেলার মাঠের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দেখেছি এই লটারীর বৈধতা দেয়ার জন্য কয়েকটি ভাঙ্গাচোরা দোকান দেয়া হয়েছে, যেখানে কোন লোকজন নাই। এই থেকে আমি বুঝতে পেরেছি মূলত মেলার আয়োজন করা হয়েছে লটারীর টিকেট বিক্রি করার জন্য। কেন, কার হস্তক্ষেপে এই লটারীর অনুমতি দেয়া হলো-বিষয়টি অবশ্যই আমার কাছে পরিষ্কার করাসহ আগামীকাল থেকে এই লটারী বন্ধ করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ প্রদান করছি।
শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী আরো বলেন, রাজবাড়ী সদর উপজেলার বাগমারা থেকে ধাওয়াপাড়া ঘাট পর্যন্ত রাস্তারয় ১০ টনের অধিক লোডের ট্রাক চলার কথা নয়। অথচ পদ্মা নদী থেকে উত্তোলনের পর অবৈধভাবে মজুদকৃত বালু পরিবহনের জন্য ২শত থেকে ৩শতটি ট্রাক ৪০ থেকে ৫০ টন লোড নিয়ে ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করছে। এই উত্তোলিত বালু থেকে শুরু করে বিক্রি ও পরিবহনের সাথে জড়িত একটি বিশেষ মহল অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করছে। শুধু তাই নয়, ওই রাস্তায় সূর্যনগর রেলগেটের কাছে টোলঘর বসিয়ে ওই বিশেষ মহলের সহযোগিতায় আদায়কারী কিছমত ও তার সহযোগীরা প্রতিদিন প্রতিটি ট্রাক থেকে অবৈধভাবে মোটা অংকের টাকা চাঁদা আদায় করছে। এই চাঁদার একটি অংশ হিসেবে জেলা পুলিশের কিছু অসাধু কর্মকর্তা প্রতিটি ট্রাক থেকে ২শত টাকা করে নিচ্ছে। যা খুবই দুঃখজনক। আমি আশা করব পুলিশ সুপার আজকের মধ্যে ওই টোলঘর ভেঙ্গে দেয়াসহ চাঁদা আদায়কারী কিছমত ও তার সহযোগীদের গ্রেফতারের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনবেন। আর ওই রাস্তার ক্ষতি প্রতিরোধে ১০টনের উপরের কোন ট্রাক যাতে চলাচল করতে না পারে সে ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
এছাড়াও তিনি ডাঃ আবুল হোসেন কলেজে পরীক্ষা দিতে গেলে হাসিবুল হোসেন শান্ত নামের যে ছাত্রলীগের নেতাকে অপহরণ করে মারপিটকারী স্থানীয় সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পুলিশকে নির্দেশ প্রদান করেন।
তিনি বলেন, রাজবাড়ী পৌরসভাসহ সদর উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নই মাদকে সয়লাব হয়ে গেছে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই চি‎ি‎হ্নত মাদক ব্যবসায়ীরা প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা করছে। তিনি আইন-শৃঙ্খলা ও মাদক নিয়ন্ত্রণের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলেকে দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদেরকে ধরে আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানান।
তিনি তার বক্তব্যে আরো বলেন, সরকারী সিদ্ধান্ত মোতাবেক দেশের কোন পৌরসভা এলাকার মধ্য দিয়ে যে মহাসড়কগুলো গেছে সেই পৌরসভাগুলোর ইজারাদাররা মহাসড়কে চলাচলকারী কোন ট্রাক বা যানবাহনের কাছ থেকে কোন টাকা নিতে পারবে না। শুধুমাত্র পৌর এলাকায় মাল পরিবহনকারী ট্রাকের কাছ থেকে ইজারার টাকা নেয়ার নিয়ম থাকলেও রাজবাড়ী পৌরসভার ইজারাদাররা মহাসড়কে চলাচলকারী যানবাহন থেকে চাঁদা আদায় করছে। এভাবে অবৈধ অর্থ আদায় বন্ধ করতে হবে। এছাড়াও তিনি তার নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন।
কমিটির উপদেষ্টা রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ জিল্লুল হাকিম বলেন, বর্তমানে রাজবাড়ী জেলায় ব্যাঙের ছাতার মত অসংখ্য অনুমোদনহীন অবৈধ ক্লিনিক, প্যাথলজী গড়ে উঠেছে। এসব ক্লিনিকে বিভিন্নভাবে রোগীদের চিকিৎসার নামে প্রতারণা করছে। যেহেতু এর নিয়ন্ত্রণ সিভিল সার্জন করে থাকেন সুতরাং কার অনুমতি আছে, আর কার অনুমতি নাই সিভিল সার্জন অফিসই সেটা ভালো জানে। আমি আশা করব রোগীদের সেবার নামে প্রতারণাকারী এ সকল অবৈধ ক্লিনিক বন্ধে সিভিল সার্জন অফিস প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। বর্তমানে জেলার প্রতিটি সরকারী হাসপাতালই খুব অপরিস্কার, সেই সাথে যারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান তাদের সাথেও নার্সরা খারাপ ব্যবহার করে। সর্বোপরি কোথাও কোন নিয়ম-শৃঙ্খলার বালাই নাই। এক্ষেত্রে অবশ্যই স্বাস্থ্য বিভাগকে নিয়ম-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ও রোগীদের সেবা প্রদান নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের জেলা পদ্মা নদীর তীরবর্তী হওয়ায় পাংশা থেকে গোয়ালন্দ পর্যন্ত শহর রক্ষা বেড়ীবাঁধ রয়েছে। যার উপর দিয়ে হাল্কা যানবাহন চলাচল করার জন্য রাস্তা তৈরী করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে এই বেড়ীবাঁধের পাশে বিভিন্ন জায়গায় নদী থেকে বৈধ ও অবৈধভাবে উত্তোলনকৃত বালু বিশাল বিশাল পাহাড়ের মত স্তুপ করে রাখা হয়েছে। এসব স্তুপ থেকে বালু পরিবহনের জন্য বাঁধের রাস্তা ব্যবহার করে ১০ চাকার হেভী লোডের ট্রাক চলাচল করছে। এতে রাস্তা নষ্ট হওয়াসহ বাঁধের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। যদি কোন কারণে এই বাঁধ ভেঙ্গে যায় তবে রাজবাড়ী জেলাসহ ফরিদপুর ও আশেপাশের জেলাগুলো বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়ে জনগণের জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হবে। এছাড়াও পদ্মা নদী থেকে বিভিন্ন সময় বৈধ ও অবৈধভাবে যে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে সেই কারণেও নদীর তীরবর্তী অঞ্চল ও বাঁধ ভেঙ্গে যেতে পারে বলে কিছুদিন আগে পরিদর্শনে আসা চাইনিজ বিশেষজ্ঞ দল অভিমত ব্যক্ত করেছেন। আগুনে মানুষের বাড়ী পুড়লে জমিটুকু অন্তত অবশিষ্ট থাকে, কিন্তু নদীতে ভেঙ্গে গেলে কিছুই আর অবশিষ্ট থাকে না। সুতরাং চাইনিজ বিশেষজ্ঞদের অভিমত ও শহর রক্ষা বাঁধ রক্ষার জন্য বালু উত্তোলন বন্ধ করা বর্তমানে খুবই জরুরী। কারণ সরকার কোটি কোটি টাকা সাধারণ মানুষকে বন্যার হাত থেকে রক্ষার জন্য বাঁধ নির্মাণ করেছে। কিন্তু কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষের কারণে আমরা এই বাঁধসহ রাস্তাগুলোকে হুমকীর মুখে ফেলতে পারি না। সুতরাং যেভাবেই হোক আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই বালু উত্তোলন বন্ধ করতে হবে। যা বর্তমানে সাধারণ মানুষের প্রধান দাবী। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগ এই বালু উত্তোলন বন্ধের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
তিনি বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পাংশা, কালুখালীসহ রাজবাড়ীর জেলার অনেক জায়গায় অবৈধ অস্ত্রের কেনাবেচা ও মজুদ হচ্ছে। এর অধিকাংশই পার্শ্ববর্তী পাবনা ও কুষ্টিয়া জেলা দিয়ে রাজবাড়ীতে আসছে। জেলার আইন-শৃঙ্খলার সাথে জড়িত সকল বাহিনী এই অবৈধ অস্ত্রধারীদের ধরতে ও অস্ত্র উদ্ধার করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। যাতে সন্ত্রাসীরা নির্বাচনের আগে কোনভাবেই অস্ত্রের মজুদ করতে না পারে।
সংসদ সদস্য মোঃ জিল্লুল হাকিম আরো বলেন, জেলার যুবসমাজকে রক্ষার জন্য মাদক বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। সব জায়গার মানুষের মধ্যেই ভালো মানুষ ও খারাপ মানুষ রয়েছে। জেলা পুলিশ চেষ্টা করে সবসময় ভালো কিছু করার জন্য, কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় পুলিশের কিছু কিছু অসাধু সদস্য মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসোহারা খায়। যদি কোন মাদক ব্যবসায়ী ভালো হয়ে মাদক ব্যবসা ছেড়ে অন্য ব্যবসায় নিয়োজিত হয় সেক্ষেত্রে ওই অসাধু পুলিশ সদস্যরা পূর্বের ন্যায় তাদের কাছ থেকে চাঁদা দাবী করে। যদি তারা না দেয় তবে তাদেরকে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে চালান দেয়া হয়। পুলিশের এই মুষ্টিমেয় স্বার্থলোভী সদস্যদের কারণে সমগ্র পুলিশ বিভাগের সম্মান নষ্ট হচ্ছে। এই ধরনের পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, কোন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেলে মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিকরা কেন মারা গেল সে ব্যাপারে বিভিন্ন প্রশ্ন তোলে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে বলে মন্তব্য করেন। অথচ এই সকল সন্ত্রাসীরা যখন সাধারণ মানুষকে অত্যাচার করাসহ নির্বিচারে হত্যা করে তখন তারা আর এসব হত্যাকান্ডের ব্যাপারে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে বলে না। সুতরাং মানুষ হত্যাকারী এই সকল সন্ত্রাসীদের ধরে আইনের আওতায় আনতে ও নিরাপরাধ মানুষকে সমাজে শান্তিতে বসবাসের সুযোগ দিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী, সুশীল সমাজ, রাজনীতিবিদ সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
কমিটির আরেক উপদেষ্টা সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কামরুন নাহার চৌধুরী লাভলী তার বক্তব্যে বলেন, বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে রাজবাড়ীর বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ খুশি রেলওয়ে ময়দানে যে বৈশাখী মেলা হচ্ছে সেখানে কোন দোকানপাট নাই। শুধুমাত্র লটারীর টিকেট বিক্রির জন্যই কথিত এই মেলাটির আয়োজন করা হয়েছে। এই লটারীর টিকেট বিক্রির ব্যাপারে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীসহ রাজবাড়ী জেলার জনপ্রতিনিধিরা অনেকেই জানেন না। তারপরও কিভাবে এই মেলার নামে লটারীর অনুমতি দেয়া হলো তা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়। এই মেলার লটারীর টিকেট বিক্রি বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আমি সংশ্লিষ্ট বিভাগকে অনুরোধ করছি।
তিনি বলেন, জেলার গোয়ালন্দ মোড় থেকে রাজবাড়ী পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় আন্তঃ জেলায় চলাচলকারী ট্রাক থামিয়ে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। বিষয়টি আমি পুলিশ সুপারকে জানানোর পর তিনি আমাকে বলেছেন পরিবহন শ্রমিকরা এক জায়গায় বড় গাড়ীর, আরেক জায়গায় ছোট গাড়ীর এবং পৌরসভার ইজারাদাররা চাঁদা নিচ্ছে। যেহেতু মহাসড়কে চলাচলকারী যানবহনের কাছ থেকে চাঁদা নেয়া যাবে না সুতরাং এই চাঁদা বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে আমি আহ্বান জানাচ্ছি।
এছাড়াও তিনি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১সহ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন।