॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ বিশ্ব টিকাদান সপ্তাহ উপলক্ষে ‘কার্যকর টিকা সকলের সুরক্ষা’-এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারিত টিকাদান(ইপিআই) কার্যক্রমের আওতায় রাজবাড়ী সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের আয়োজনে গতকাল ২৬শে এপ্রিল দুপুর ১২টায় কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ রহিম বক্সের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ স্বপন কুমার কুন্ডু, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার(ক্রাইম) মোঃ আছাদুজ্জামান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে ইয়াসমিন করিমী, সাবেক সিভিল সার্জন ডাঃ পারিজাত কুমার পাল, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এস.এম.এ হান্নান ও ব্র্যাক জেলা প্রতিনিধি নেফাজ উদ্দিন প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ কাজী শফিউল আজম শুভ।
বিশ্ব টিকাদান সপ্তাহের প্রতিপাদ্য তুলে ধরে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(ডব্লিউএইচও)’র সার্ভিল্যান্স মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ মোঃ মোরশেদুল ইসরাম খান এবং অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের জুনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা মোকরেমা মাঞ্জুরা।
এ সময় জেলা তথ্য অফিসার মোঃ মোক্তার আলী মল্লিক, সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মঞ্জুরুল হক, বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ রহিম বক্স বক্তব্যে বলেন, গত ২৪শে এপ্রিল থেকে সারা বিশ্বের ন্যায় রাজবাড়ী জেলায়ও বিশ্ব টিকাদান সপ্তাহের কার্যক্রম শুরু হয়েছে, যা আগামী ৩০শে এপ্রিল পর্যন্ত চলমান থাকবে। সরকারের বিনামূল্যে টিকাদান কর্মসূচীর মূল উদ্দেশ্য হলো শিশুদের বিভিন্ন ভয়াবহ রোগ থেকে নিরাপদ রেখে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মেধাসম্পন্ন, সুস্থ ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আধুনিক বিশ্বের উপযোগী করে গড়ে তোলা। টিকাদান সপ্তাহ উপলক্ষে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে শহর পর্যন্ত যে সকল বাচ্চাকে অভিভাবকদের না জানাসহ বিভিন্ন কারণে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়নি তাদেরকে খুঁজে বের করে প্রয়োজনে তাদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে টিকা প্রদান করা হবে। যাতে জেলায় একটি বাচ্চাও টিকাদান কার্যক্রমের আওতার বাইরে না থাকে। সরকারের এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে সরকারী-বেসরকারী সকল দপ্তর, জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এনজিও, সংবাদ মাধ্যমসহ সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ব্যাপক প্রচারণার মাধ্যমে এই টিকাদান সপ্তাহকে সফল করতে হবে, যাতে আমাদের জেলার সকল শিশুকে মারাত্মক কিছু রোগ থেকে আজীবন মুক্ত রাখা সম্ভব হয়। তিনি জেলাবাসীকে সরকারের এই কর্মসূচী সফল করার আহ্বান জানান। অন্যান্য বক্তাগণও বিশ্ব টিকাদান কর্মসূচীর বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন।
উল্লেখ্য, গত ২৪শে এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে আগামী ৩০শে এপ্রিল পর্যন্ত এই বিশ্ব টিকাদান সপ্তাহে জেলার যে সকল শিশুকে এখনও এমআর-১ ও এমআর-২ টিকা দেওয়া হয়নি বা দুইটি টিকা ডোজের মধ্যে একটি ডোজ নিয়েছে তাদেরকে জেলার ৪২টি ইউনিয়নের ১২৬টি ওয়ার্ডে, ৭টি স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে (উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সদর হাসপাতাল, পৌরসভা, সূর্যের হাসি ক্লিনিক) এবং অস্থায়ী ১০৬৩টি (প্রতি ওয়ার্ডে ৮টি করে) টিকাদান কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে। যার যার অবস্থান থেকে জেলাবাসীকে তাদের পরিবারের, সহকর্মীদের ও প্রতিবেশীদের যে শিশুদের এখনও টিকা নেয়নি বা দুইটি ডোজের মধ্যে একটি দেয়া হয়েছে তাদেরকে নিকটবর্তী টিকাদান কেন্দ্র থেকে টিকা নেয়ার জন্য জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে।