Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

দুর্ভোগে জনগণ॥ বালিয়াকান্দির বিভিন্ন সড়কের বেহাল দশা॥ঘটছে দুর্ঘটনা

॥বালিয়াকান্দি প্রতিনিধি॥ রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার বিভিন্ন সড়কের বর্তমানে বেহাল দশা। যার ফলে ঘটছে দুর্ঘটনা। দুর্ভোগ পোহাচ্ছে যানবাহনের চালক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীরা।
সরেজমিনে বালিয়াকান্দি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উপজেলা সদরের প্রাণকেন্দ্রের নারুয়া-বালিয়াকান্দি সড়ক, হাসপাতাল সড়ক, গোরস্থান-পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় সড়ক, রাজবাড়ী-বালিয়াকান্দি সড়কের কলেজ মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে সড়ক ভেঙ্গে গিয়ে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে।
এছাড়া রাস্তার দু’পাশের ড্রেনে কোন ঢাকনা না থাকায় অনেক সময় যানবাহন উল্টে ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। বালিয়াকান্দি(তালপট্টি)-মধুখালী, বালিয়াকান্দি-কামারখালী, বালিয়াকান্দি চৌরাস্তা-থানা সড়কসহ অধিকাংশ সড়কই যানবাহন চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই এসব সড়কে পানি জমে। কাদা-মাটিতে মাখামাখী হয়েই এই সড়ক দিয়ে পায়ে হাঁটা মানুষগুলোকে চলতে হয়। অনেক সময় পা পিছলে পড়ে গিয়ে বিড়ম্বনার শিকারও হতে হয়। অটোভ্যান, ইজিবাইক, মাহেন্দ্র, ম্যাজিক গাড়ীগুলো চলার সময় কাদা ছিটে একাকার হয়ে যায়।
বালিয়াকান্দি শহরটি ছোট হলেও উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের প্রাণকেন্দ্র। ফলে অফিস-আদালত, ব্যাংক, থানা ও হাসপাতালসহ বিভিন্ন কাজে সাধারণ মানুষকে আসতে হয়। কিন্তু সড়কগুলোর বেহাল দশার কারণে সবাইকেই দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দীর্ঘদিন এ অবস্থা চললেও সড়কগুলো সংস্কারের কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না। অনেক সময় সামান্য সংস্কার করা হলেও নিম্নমানের কাজের কারণে কিছু দিনের মধ্যেই আবার আগের অবস্থার সৃষ্টি হয়। জনদুর্ভোগ কমাতে অতি দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো সংস্কার করা দরকার।
নারুয়াগামী ইজিবাইকের যাত্রী গোলাম মোস্তফা শেখ ও রনি আক্তারের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, আমরা নারুয়া থেকে সকালে বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসেছিলাম চিকিৎসা গ্রহণের জন্য। নারুয়া থেকেই এই ইজিবাইক ভাড়া করে এসেছি। কিন্তু ওয়াপদা মোড় থেকে বালিয়াকান্দি উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তরের সামনের সড়ক যে এতো খারাপ তা বলার মতো নয়। এটা দেখে মনে হয় এই দিকে কর্তৃপক্ষ নজর দেন না। এই সড়কটি অতি দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন। বর্তমান সরকার সারা দেশে বিভিন্ন উন্নয়ন করছে। কাজেই বালিয়াকান্দি উপজেলাতেও এ ধরনের ভাঙ্গাচোড়া রাস্তার উন্নয়ন কাজ করা খুব দরকার।
নারুয়া রোডের হাজী মোসলেম উদ্দিন মার্কেটে কেনাকাটা করতে আসা জেসমিন নাহার বলেন, আমি বহরপুর থেকে এখানে এসেছি। অটোভ্যান থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে মধুখালীর দিক থেকে আসা একটি ম্যাজিক গাড়ীর চাকা থেকে ছিটকে আসা কাদা এসে আমার গায়ে লেগে কাপড়-চোপড় নষ্ট হয়। এ অবস্থায়ই আমি কেনাকাটা করে ফিরছি।
এইচ.এস.সি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে আসা কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী বলেন, এখানে রাস্তার অবস্থা এতো খারাপ যে যানবাহন থেকে মাটিতে পা ফেলার অবস্থা নেই। গাড়ী থেকে নামতেই্ পা গিয়ে পড়ে কাদার মধ্যে। পরে আসা ইউনিফর্ম-পোশাক নষ্ট হয়ে যায়। জানি না এখানকার জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তারা কি করেন। উপজেলা সদরে যোগাযোগের সড়কগুলোর এমন বেহাল দশা হলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না।
বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আবুল কালাম আজাদ জানান, বালিয়াকান্দি বাজারের মধ্যকার সবগুলো রোডের টেন্ডারের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই সকল রোডের কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাসুম রেজা জানান, রাস্তাগুলো সংস্কার করার জন্য কাগজপত্র প্রেরণ করা হয়েছে। এরমধ্যে কিছু কিছু রাস্তার কাজের টেন্ডার হয়েছে। অচিরেই এসব রাস্তার কাজ সম্পন্ন করা হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী সজল কুমার দত্ত জানান, কয়েকটি রাস্তা এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের অর্থায়নে আরসিআইপি প্রকল্পে অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। প্রকল্পসহ মৃগী ভায়া নারুয়া-বালিয়াকান্দি রোড সেপ্টি ও রোড ম্যাচিং কাজ করা হবে। উপজেলা প্রাণকেন্দ্রের প্রতিটি সড়ক আমাদের নজরে রয়েছে। আমরা অতি দ্রুত সড়কগুলোর সংস্কার কাজ করবো।