Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

গোয়ালন্দ হাসপাতালের এক্স-রে মেশিন দুই মাস যাবৎ বিকল॥রোগীদের দুর্ভোগ॥কর্তৃপক্ষ উদাসীন

॥আবুল হোসেন॥ রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার ৫১শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একমাত্র এক্স-রে মেশিনটি দীর্ঘ দেড় মাস ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। এক্স-রে করতে না পেরে প্রতিদিন অসংখ্য রোগীকে প্রায় ২০ থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে রাজবাড়ী বা ফরিদপুর জেলা সদর গিয়ে এক্স-রে করতে হচ্ছে। এতে বাড়তি অর্থ অপচয়সহ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে এ উপজেলাসহ আশপাশ এলাকার মানুষ। কর্তৃপক্ষ বলছে বিষয়টি দ্রুত সমাধানে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, দৌলতদিয়া-খুলনা জাতীয় মহাসড়কের পাশে অবস্থিত ৫১শয্যা বিশিষ্ট গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গুরুত্ব অনেক। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম প্রবেশদ্বার হওয়ায় প্রতিদিন গোয়ালন্দ উপজেলাসহ মহাসড়কে ছোট-বড় দূর্ঘটনা ঘটে। এসব দুর্ঘটনার শিকার রোগীসহ পাশের রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর এলাকার অনেক রোগী এখানে চিকিৎসা নিতে আসে। যে কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির গুরুত্ব বহন করে অনেক। গত ১৩ই ফেব্রুয়ারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দেয়ালে টাইলস বসানোর কাজ করতে এক্সরে মেশিন কক্ষে বৈদ্যুতিক লাইনের কিছু কাজ করতে যায় ইলেক্ট্রেশিয়ানরা। পর দিন গত ১৪ই ফেব্রুয়ারী জনৈক এক রোগীর এক্স-রে করা অবস্থায় মেশিনটি বিকল হয়ে যায়। এরপর থেকে মেশিনটি দিয়ে কোন এক্সরে করা যাচ্ছেনা।
সম্প্রতি ঢাকার এক সিনিয়র ফটো সাংবাদিক আশরাফুল আলম টিটু দৌলতদিয়া ঘাটে রাতে দুর্ঘটনার শিকার হলে তাকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক জরুরী ভাবে তাকে এক্স-রে করার কথা বলেন। এক্স-রে মেশিন নষ্ট থাকায় বাধ্য হয়ে তিনি ওই মধ্যরাতেই ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেন। এ ধরনের প্রায় প্রতিদিন অনেক রোগীকে ফিরে যেতে হচ্ছে।
দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিকেল টেকনোলোজিস্ট রেডিওলোজি মোঃ কামরুল হাসান জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উন্নয়ন কাজ করতে আসা কয়েকজন ইলেক্ট্রেশিয়ান এসে এক্স-রে মেশিনের কিছু তাড় সরানোর কাজ করেন। পরদিন এক রোগী এক্স-রে করা অবস্থায় হঠাৎ শব্দ হয়ে মেশিনটি বন্ধ হয়ে যায়। অথচ প্রতিদিন অন্তত ভর্তিকৃত ৮/১০জন ছাড়াও গড়ে ২০/২৫জনের এক্স-রে করতে হতো। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দুই চিকিৎসা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল বাক্কী ও মোঃ নুরুল ইসলাম জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি দৌলতদিয়া-খুলনা মহাসড়কের পাশে স্থাপিত হওয়ায় প্রতিদিন উপজেলাসহ নানা অঞ্চলের অনেক দুর্ঘটনার রোগী এখানে আসে। চিকিৎসক সংকট ছাড়াও এক্স-রে বন্ধ রয়েছে। প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তিকৃত ৮/১০জনসহ আউটডোরে চিকিৎসা নিতে আসা আরো ২০/২৫জন রোগী এক্সরে থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ ধরনের রোগীকে বাধ্য হয়ে রাজবাড়ী বা ফরিদপুর জেলা সদরে গিয়ে এক্সরে করতে হচ্ছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শাহিদা পারভীন বলেন, গত ১৪ই ফেব্রুয়ারী থেকে এক্সরে মেশিন নষ্ট হওয়ার পর আরেকটি নতুন এক্স-রে মেশিনের চাহিদা জানিয়ে ঢাকা মহাখালী স্বাস্থ্য অধিপ্তরের পরিচালক(লাইন ডাইরেক্টর) বরাবর পত্র প্রদান করা হয়েছে। একই সাথে নষ্ট হওয়া মেশিনটিও মেরামত করে চালু করার উপযোগী করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।