Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

রাজবাড়ী জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা

॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল ৮ই এপ্রিল সকাল ১০টায় কালেক্টরেটের সম্মেলন কক্ষে জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় কমিটির সদস্য পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাকিব খান, সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ রহিম বক্স, রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এডঃ এম.এ খালেক, পাংশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরিদ হাসান ওদুদ, গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবিএম নূরুল ইসলাম, বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আবুল কালাম আজাদ, কালুখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী সাইফুল ইসলাম, গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু নাসার উদ্দিন, বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাসুম রেজা, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রাজিব মিনা, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হেদায়েত আলী সোহ্রাব প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই’র উপ-পরিচালক মোঃ জিল্লুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ, জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনারগণ, বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ ও কমিটির অন্যান্য সদস্যগণসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী বলেন, বর্তমানে জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সার্বিক দিক বিচারে পূর্বের ন্যায় ভালো রয়েছে। তবে ধর্ষণসহ নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা কমিয়ে আনতে জেলা পুলিশ আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে। বিভিন্ন সদস্যের অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজবাড়ী রেলগেট ও বাজারের রাস্তায় যানজট নিরসনে আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা নিতে হবে। এই যানজটের প্রধান কারণ অনিয়মতান্ত্রিকভাবে যেখানে-সেখানে অটো রাখা, বাজারের ফুটপাতে দোকান ও মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভদের বাজারে ঢোকার রাস্তায় মোটর সাইকেল পার্কিং করে রাখা। এই সব সমস্যার সমাধানে জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ ও পৌরসভা এক হয়ে কাজ করবে।
সভায় জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী আরো বলেন, রাজবাড়ী থানার ৫শত গজের মধ্যে একটি বাড়ীতে একই দিন রাতে তিনটি মোটর সাইকেল চুরি হয়েছে আর এই চুরির ঘটনায় একটি জিডি করা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে চুরির পরিবর্তে অবশ্যই মামলা করা উচিত ছিল। এই বিষয়টি জেলা পুলিশ অবগত রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের বক্তব্য অনুযায়ী, একটি সংঘবদ্ধ চক্র এই চুরির ঘটনাটি ঘটিয়েছে। এই বিষয়ে পুলিশ সুপার অবগত আছেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিজেই তদন্ত করছেন। আমরা আশা করব, অতি অল্প সময়ের মধ্যে এই চুরির সাথে যারা জড়িত তাদেরকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে জনগণের জানমালের সঠিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, বালিয়াকান্দি উপজেলার চেয়ারম্যান মোঃ আবুল কালাম আজাদ মাদক সংশ্লিষ্ট বিষয়কে কেন্দ্র করে যারা মাদকের সাথে জড়িত নয় তাদেরকে হয়রানীর অভিযোগ তুলেছেন। ঘটনার দিন তিনি বিষয়টি আমাকে জানানোর পর আমি সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ সুপারকে অবহিত করেছি। তিনি আমাকে আশ্বস্ত করেছেন যদি এই ধরনের হয়রানীর কোন ঘটে থাকে তবে বিষয়টির তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, পৌর মেয়রের অভিযোগ মতে রাজবাড়ী শহরের বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে বালু পরিবহনের ক্ষেত্রে ট্রাকগুলো বালু না ঢেকেই পরিবহন করে। এ বিষয়ে ট্রাক মালিক সমিতিকে বার বার জানানোর পরও তার শুনছে না। বিষয়টি নিয়ে আমি পৌর মেয়র ও ট্রাক মলিকদের সাথে মতবিনিময়ের মাধ্যমে বিষয়টির সুরাহা করব।
এছাড়াও সভায় গোয়ালন্দে ট্রেন স্লো করে মাদক বহনকারীদের নামতে সহায়তা করা, বালুমহাল ইজারা প্রদানের দ্বারা সরকারী বেশী রাজস্ব আদায়, ভেজাল খাদ্যের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ জেলার আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।