॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলাধীন চরবাগমারাস্থ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কার্যালয়ের বিপরীতে (রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে) বহু প্রতীক্ষিত বিদ্যুতের ১৩২/৩৩ কেভি গ্রীড উপকেন্দ্রের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করা হয়েছে।
গতকাল ২৭শে মার্চ বিকাল ৪টায় আনুষ্ঠানিকভাবে ভিত্তিপ্রস্তরের ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী(কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ) ও রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী এবং রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম আনুষ্ঠানিকভাবে ভিত্তিপ্রস্তরের ফলক উন্মোচন করে উপকেন্দ্রটির নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন।
এ সময় পাওয়ার গ্রীড কোম্পানী বাংলাদেশ লিঃ (পিজিসিবি)’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুম আল বেরুনী, অনুষ্ঠানের সভাপতি রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার, পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি বিপিএম-সেবা, ডিপিডিবি’র নির্বাহী পরিচালক(অপারেশন) এটিএম হারুন অর রশিদ, পিজিসিবি’র প্রকল্প পরিচালক একেএম গাউস মহিউদ্দিনসহ জেলার বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, পিজিসিবি’র বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ এবং জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
এ উপলক্ষ্যে পাওয়ার গ্রীড কোম্পানী বাংলাদেশ লিঃ-এর আয়োজনে রাজবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী, সম্মানিত বিশেষ অতিথি হিসেবে রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ জিল্লুল হাকিম ও পিজিসিবি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুম আল বেরুনী, বিশেষ অতিথি হিসেবে পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি বিপিএম-সেবা এবং ডিপিডিবি’র নির্বাহী পরিচালক(অপারেশন) এটিএম হারুন অর রশিদ বক্তব্য রাখেন।
প্রকল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিজিসিবি’র প্রকল্প পরিচালক একেএম গাউস মহিউদ্দিন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রামকান্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাসেম বিশ্বাস।
এ সময় রাজবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মোঃ কামরুল ইসলাম গোলদার, ওজপাডিকো’র নির্বাহী প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকতাগণ, বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, রাজবাড়ী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ তারিক কামাল, পিজিসিবি’র বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ, জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী বলেন, আজকের দিনটি রাজবাড়ীবাসীর জন্য একটি আনন্দের দিন। কারণ এই ১৩২/৩৩ কেভি গ্রীড উপকেন্দ্র নির্মাণ কাজ উদ্বোধনের মাধ্যমে রাজবাড়ীবাসীর বহুদিনের একটি দাবী পূরণ হলো। এই কেন্দ্রটি নির্মিত হলে আমাদেরকে আর বিদ্যুতের জন্য ফরিদপুর ও কুষ্টিয়ার উপর নির্ভর করতে হবে না। এই উপকেন্দ্র থেকেই জেলার চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে। তিনি প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের ২বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার চুক্তি থাকলেও যাতে ১ বছরের মধ্যে উপকেন্দ্রটি চালু করা যায় সে বিষয়টি মাথায় রেখে কার্যসম্পাদনের আহ্বান জানান।
সম্মানিত বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ জিল্লুল হাকিম বলেন, এই বিদ্যুৎ গ্রীড স্টেশন নির্মাণ কাজ উদ্বোধনের মাধ্যমে রাজবাড়ী জেলাবাসীর জন্য একটি মাইলফলক স্থাপিত হলো। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক ইচ্ছা ২০১৮ সালের মধ্যে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে রাজবাড়ীবাসীকে যাতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায় তার জন্য আমার, কাজী কেরামতের ও জেলা প্রশাসকের অক্লান্ত চেষ্টার ফলে রাজবাড়ীতে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে।
তিনি দেশের সকল সেক্টরে উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখাসহ জেলার সার্বিক উন্নয়ন সাধনের লক্ষ্যে আগামী নির্বাচনে পুনরায় শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী করার জন্য সকলকে নৌকা প্রতীকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী বলেন, আমি যোগদানের পর রাজবাড়ী জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা এতটাই নাজুক ছিল যে দিনে ১৭ থেকে ১৮বার বিদ্যুৎ বন্ধ থাকতো। যা রাজবাড়ীর জনপ্রতিনিধিসহ সকলের কাছে একটি বিব্রতকর বিষয় ছিল। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী, রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ জিল্লুল হাকিম, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কামরুন নাহার চৌধুরী লাভলীসহ সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টার জন্য আজকে রাজবাড়ীর বিদ্যুৎ ব্যবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। আর এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য এই গ্রীড উপকেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। তিনি এই গ্রীড উপকেন্দ্র যাতে স্বল্প সময়ের মধ্যে স্থাপন করা সম্ভব হয় সে জন্য জেলাবাসীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
উল্লেখ্য, আগামী ২০২০ সালের ২৪শে জানুয়ারীর মধ্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। এটি নির্মিত হলে রাজবাড়ী জেলার বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণের পাশাপাশি ভোল্টেজও বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে রাজবাড়ীতে শিল্প-কারখানাসহ স্থাপনের সুবিধা বৃদ্ধিসহ জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থারও উন্নতি হবে।