Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

গোয়ালন্দ পৌরসভার হিসাব রক্ষকের কক্ষে তালা দিয়েছে কাউন্সিলররা!

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ বকেয়া পাওনা টাকার দাবীতে গতকাল ৩না জানুয়ারী দুপুরে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ পৌরসভার কয়েকজন কাউন্সিলর হিসাব রক্ষকের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত ওই কক্ষের তালা খোলা হয়নি। তাদের অভিযোগ নিয়ম না মেনে মেয়রের নির্দেশে হিসাব রক্ষক অনেক আগের বকেয়া টাকা না দিয়ে হাল নাগাদ টাকা পরিশোধ করছেন।
পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র ও ১নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ নিজাম উদ্দিন শেখ অভিযোগ করে বলেন, পৌরসভার এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের টাকা অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে রাজস্ব খাতে সরিয়ে মেয়র ইচ্ছেমতো ব্যায় করছে। অথচ আমরা নিজেরাই প্রায় ৪/৫বছর আগের টাকা এখনো পাই। সেই টাকা পরিশোধ না করে আমাদের কারোর সাথে আলোচনা না করেই তিনি খরচ করছেন। কয়েক মাস আগে তার এক নিকট স্বজনের মাধ্যমে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে ৩২টি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা(সিসি) বসানো হয়েছে। তার বিল প্রায় ১২/১৩লাখ টাকা কয়েক কিস্তিতে পরিশোধ করেন। গত সোমবারও সেই টাকা পরিশোধ করা হয়। অথচ আমাদেরকে নানা অজুহাতে তালবাহানা করা হচ্ছে। যা নিয়ে কাউন্সিলর ও ঠিকাদারদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র ও ৮নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলাউদ্দিন মৃধা অভিযোগ করেন, পৌরসভার ৪ থেকে ৬বছর আগের এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের বরাদ্দকৃত কাজের কোটি টাকার উপর আমাদের কয়েকজন কাউন্সিলরের কাছে পাওনা রয়েছে। কিন্তু সেই টাকা এখন পর্যন্ত পৌরসভা থেকে পরিশোধ করা হয়নি। এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের টাকা রাজস্ব খাতে সরিয়ে তার ইচ্ছেমতো ব্যয় করছেন। অথচ এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের কোটি টাকার উপর বকেয়া রয়েছে। আমাদের সাথে বসে আলোচনা করে সমাধানে না আসা পর্যন্ত তালা লাগানো থাকবে।
পৌরসভার হিসাব রক্ষক মোঃ ওমর আলী জানান, মেয়রের সাথে কাউন্সিলরদের কি হয়েছে আমার জানানেই। দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে কয়েকজন কাউন্সিলর এসে বললেন কক্ষ থেকে বের হন আমরা তালা লাগাবো। কি আর করার আমি বের হওয়া মাত্র তারা আমার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে চলে যায়।
এ প্রসঙ্গে মেয়র শেখ মোঃ নিজামের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করা হলেও ফোন না ধরায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। পৌরসভার প্যানেল মেয়র কোমল কুমার সাহার মোবাইলে ফোন দিলে তিনি ফোনটি কেটে দেয়ায় তারও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
পৌরসভার দ্বিতীয় প্যানেল মেয়র নাসির উদ্দিন বলেন, আমি নিজেই কাজের প্রায় ৬ থেকে ৭লাখ টাকা পাবো। আমার মতো অধিকাংশ কাউন্সিলর ও ঠিকাদার পাবে। টাকার জন্য পৌরসভার সচিব, হিসাব রক্ষকের মাধ্যমে একাধিকবার মেয়রকে জানানো হয়। কিন্তু নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে পূর্বের বকেয়া টাকা দিচ্ছেন না। এই ক্ষোভে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে কাউন্সিলররা মিলে হিসাব রক্ষকের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়।