॥বিশেষ প্রতিনিধি॥ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার পুত্র দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেয়া হয়েছে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড। অন্যদিকে ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায়ও তিনি আসামী। ওই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে তার আরও বড় সাজা হবে।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির এক সিনিয়ার নেতা বলেন, সার্বিক দিক বিবেচনা করলে দেখা যায় মামলায় জর্জরিত সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে দেশে আসা অসম্ভব। কারণ, এলেই তিনি গ্রেফতার হবেন। তিনি গ্রেফতার হলেও আমরা তাকে ছাড়িয়ে আনার জন্য দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে পারব না, তা খালেদা জিয়ার কারাগারে যাওয়ার ঘটনায় প্রমাণিত।
বর্তমানে তারেক রহমান ফেরারী আসাসী। ফলে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ হাতে নিয়েছে ইন্টারপোল। পুলিশ সদর দফতরের ন্যাশনাল কাউন্সিলিং ব্যুরো(এনসিবি) সুত্রে জানাযায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার সাজাপ্রাপ্ত তিন আসামীকে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে এনসিবি’র সহকারী মহাপরিদর্শক(এআইজি) মহীউল ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশনা আইন মন্ত্রণালয়ে বিচার বিশ্লেষণ করে পলাতক আসামীদের বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত নেবে। ওই সিদ্ধান্ত পুলিশ সদর দফতরের এনসিবিতে পাঠানোর পর, আমরা সেটি ফ্রান্সে ইন্টারপোলের সদর দফতরে পাঠিয়ে দেবো। রেড নোটিশ জারীর চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত ইন্টারপোলের সদর দফতর থেকেই দেয়া হবে।
অপরদিকে লন্ডনে বাংলাদেশ হাই-কমিশনে হামলায় মদদের অভিযোগে গ্রেফতার হতে পারেন খালেদার ছেলে তারেক রহমান। বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া গ্রেফতারের আগের দিন গত ৭ই ফেব্রুয়ারী তারেক রহমানের মদদে একদল বিক্ষোভকারী লন্ডনে বাংলাদেশ হাই-কমিশনে স্মারকলিপি জমা দিতে গিয়ে হামলা চালায়। হামলাকারীরা হাই-কমিশনের কিছু আসবাবপত্র ভাঙ্গার পাশাপাশি শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ছবি দেয়াল থেকে নামিয়ে মাটিতে ফেলে মাড়ায়। দীর্ঘক্ষণ এই অরাজকতা চলার পরে পুলিশ এসে বিক্ষোভ ভেঙে দেয়। বিএনপি’র এক নেতা নাসির আহমেদ শাহিনকে গ্রেফতার করে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড।
তিনিই পুলিশকে জানান, তারেকের নির্দেশেই তারা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। ঘটনার পরে বাংলাদেশ হাই-কমিশন তারেক রহমানকে প্রধান আসামী করে ৫০জনের বিরুদ্ধে লন্ডন পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করে।
বাংলাদেশের কূটনৈতিক সুত্রের দাবী, বিদেশি দূতাবাসে হামলার বিষয়টি বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে পুলিশ। প্রধান আসামী তারেক রহমানকে গ্রেফতারের কথা বিবেচনা করছে পুলিশ।
ফলে এক দিকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ইন্টারপোলের রেড নোটিশে গ্রেফতার এবং অন্যদিকে লন্ডনে বাংলাদেশ হাই-কমিশনে অরজকতার মামলায় গ্রেফতারের সম্ভাবনা সৃষ্টি। সর্বোপরি ২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলায় দন্ডিত হয়ে সাজাপ্রাপ্ত হলে তারেকের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারেরই যবনিকাপাত হয়ে যাবার সমূহ সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ।
অন্যদিকে বিএনপির কয়েকজন শীর্ষ নেতার সঙ্গে কথা বলে জানাযায়, খালেদা জিয়ার জামিন বা মুক্তি বিলম্বিত হলেই কর্মী সংকটের উসিলায় অনেক নেতাই তারেক রহমানের নেতৃত্ব অস্বীকার করে দল থেকে সরে পড়বেন। ফলে আন্দোলন দূরে থাক দল টিকিয়ে রাখাই বিএনপির জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দল টিকিয়ে রাখাই বিএনপির জন্য চ্যালেঞ্জ॥ইন্টারপোলের রেড নোটিশে গ্রেপ্তার হতে পারেন ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান
