Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

নবনিযুক্ত প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলীকে অভ্যর্থনা জানাতে দৌলতদিয়া ঘাটে জনস্রোত

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ নবনিযুক্ত কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের প্রতিমন্ত্রী ও রাজবাড়ী-১ আসনের ৪বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হওয়ার পর গতকাল ৬ই জানুয়ারী প্রথম নিজ জেলা রাজবাড়ীতে আসেন।
তাঁর আগমনে উপলক্ষে সকাল থেকে রাজবাড়ী ও গোয়ালন্দ উপজেলার আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ আনন্দ দেখা দেয়। দুপুরে দৌলতদিয়া ঘাটে কয়েক হাজার নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হন তিনি। মানুষের ঢল থেকে অনেকটা আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন কাজী কেরামত আলী।
গতকাল শনিবার সকালে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী ঢাকা থেকে সড়ক পথে রওয়ানা করেন। দুপুর সোয়া বারোটার দিকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় পৌছলে আগে থেকে প্রস্তুত রাখা ভিআইপি ফেরী ‘ঢাকা’য় উঠেন। তাঁকে বহন করে ফেরীটি দৌলতদিয়ার ৫নম্বর ঘাটে দুপুর ১টা ১০মিনিটে এসে পৌছে। তার আগেই দৌলতদিয়া ঘাটে মানুষের ঢল নামে।
তাঁকে ফুলেল অভ্যর্থনা জানাতে উপস্থিত হন রাজবাড়ী জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম, জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ আছাদুজ্জামান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফকীর আব্দুল জব্বার, সহ-সভাপতি ও পৌরসভার মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলীসহ জেলা, সদর ও পৌর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও কৃষক লীগের নেতৃবৃন্দ, গোয়ালন্দ উপজেলা চেয়ারম্যান এবিএম নুরুল ইসলাম, উপজেলা আ’লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য মোঃ নুরুজ্জামান মিয়া, সাধারণ সম্পাদক ও দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মন্ডল, কালুখালী, বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোঃ আবুল কালাম আজাদ, কালুখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী সাইফুল ইসলাম, পাংশা পৌরসভার মেয়র মোঃ আব্দুল মাসুদ বিশ্বাসসহ পাংশা, বালিয়াকান্দি ও কালুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ, গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবু নাসার উদ্দিন, সরকারী কামরুল ইসলাম কলেজের অধ্যক্ষ মোয়াজ্জেম হোসেন বাদল প্রমুখ। এছাড়া কয়েক হাজার দলীয় নেতাকর্মী, সাধারণ মানুষ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণ উপস্থিত হন।
প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী বহনকৃত ফেরীটি ঘাটে ভেড়ার আগেই তিনি উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্য হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান। এ সময় দলীয় শ্লোগানে মুখরিত হয় ঘাট এলাকা। ফেরী থেকে নামার প্রাক্কালে ফুলেল পাপড়ি ছিটিয়ে ও শুভেচ্ছা জানাতে দলীয় নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ হুমড়ি খেয়ে পড়েন। উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে মন্ত্রী গাড়িতে উঠেন। পরে ধীর গতিতে গাড়ি সামনের দিকে এগোতে থাকে আর শুভেচ্ছা জানাতে থাকেন। ভিড়ের মধ্যে ফেরী থেকে নামতে তাকে আধা ঘন্টার মতো সময় লেগে যায়। এ সময় তার সাথে সহধর্মিনী মিসেস রেবেকা সুলতানা সাজু, জামাতা আসিফ ইকবাল ও একমাত্র কন্যা কানিজ ফাতেমা চৈতী উপস্থিত ছিলেন।
ফেরী থেকে নামার আগ মুহুর্তে আলাপকালে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, নতুন বছরের উপহার হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজবাড়ীবাসীর উপহার হিসেবে মন্ত্রীত্ব দিয়েছেন। এজন্য রাজবাড়ী জেলাবাসীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন জানাই। সেই সাথে বলেন, আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বসে থাকার জন্য নয়। কারিগরি শিক্ষার একটি বিষয়কে মাধ্যমিক স্তর থেকে বাধ্যতামূলক করতে শুরুতে কাজ করবেন। দেশের মাদ্রাসা শিক্ষাকে ডিজিটাল ও আধুনিক শিক্ষায় রূপান্তরিত করতে সব ধরনের কাজ করবেন। এছাড়া সব সময় বলে এসেছি দেশের বেকার সমস্যা সমাধান করতে হলে আগে কারিগরি শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব বাড়াতে হবে। যেহেতু সেই দায়িত্ব পেয়েছি, তাই এটাকে কাজে লাগাতে চাই।
এছাড়াও তিনি বলেন, রাজবাড়ীবাসী তাকে এতটা ভালোবাসেন কখনোই বুঝতে পারেনি। ফেরী ঘাটে মানুষের ঢল দেখে তিনি অনেকটা আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, রাজবাড়ীবাসীর ভালোবাসার প্রতিদান হিসেবে মন্ত্রীত্ব পেয়েছি। তাই অগ্রাধিকার দিবেন রাজবাড়ী জেলার জন্য কাজ করতে। পরে তিনি রাজবাড়ী শহরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেন।
পরে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে দুপুর আড়াইটায় ২টায় বিশাল গাড়ি বহরের সাথে তিনি রাজবাড়ী সার্কিট হাউজে আসেন। সেখানে তাকে ফুলের তোড়া দিয়ে অভ্যর্থনা জানান সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কামরুন নাহার চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী, জেলা পুলিশের পক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রাকিব খান ও রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী। পরে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
এরপর প্রতিমন্ত্রী বিকেল সাড়ে তিনটায় রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে স্থাপিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্প্যমাল্য অর্পন করেন। সেখান থেকে বিকেল চারটায় তিনি আসেন জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে। সেখানেও ফুলের তোড়া দিয়ে তাকে সংবর্ধনা জানান জেলা আওয়ামীলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সংবর্ধনা শেষে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে তিনি শহরের কাজীকান্দায় নিজ বাড়িতে যান। সেখানে তিনি রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দসহ তার মরহুম পিতা সাবেক গণপরিষদ সদস্য কাজী হেদায়েত হোসেন ও মাতা মোনাক্কা বেগমের কবরে এবং এরপর তিনি রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম এডঃ আব্দুল ওয়াজেদ চৌধুরীর কবরে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পনের পর দোয়া ও মোনাজাত করেন। এ সময় প্রয়াত দুই নেতার পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন উপস্থিত ছিলেন।