Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

রাজবাড়ী মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে গড়ে প্রতিদিন মাত্র ১জনের ডেলিভারী! সেবাগ্রহীতারা বিনামূল্যের কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ী মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র (ম্যাটার্নিটিতে) চলতি ২০১৭ সালের ১লা জানুয়ারী থেকে ২৮শে ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ডেলিভারী করা হয়েছে ৪১০জন প্রসূতির। যার মধ্যে ২৭৬টি নরমাল ডেলিভারী ও ১৩৪টি সিজার।
প্রতিবছর বিপুল পরিমান সরকারী অর্থ এই প্রতিষ্ঠানের পেছনে ব্যয় করা হলেও এখানে সেবাগ্রহীতা নারীরা বিনামূল্যের কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী রাজবাড়ী মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র(ম্যাটার্নিটিতে) জানুয়ারী মাসে মোট ডেলিভারী করা হয়েছে ৪২জন প্রসূতির, যার মধ্যে ২২জনের নরমাল ও ২০জনের সিজার, ফেব্রুয়ারী মাসের ২৬জনের মধ্যে ১৯জনের নরমাল ও ৭জনের সিজার, মার্চ মাসের ৩৫জনের মধ্যে ২২জনের নরমাল ও ১৩জনের সিজার, এপ্রিল মাসের ৩৯জনের মধ্যে ২৯জনের নরমাল ও ১০জনের সিজার, মে মাসের ৪৬জনের মধ্যে ২৮জনের নরমাল ও ১৮জনের সিজার, জুন মাসের ১৭ জনের মধ্যে ১৬ জনের নরমাল ও ১ জনের সিজার, জুলাই মাসের ৩১জনের মধ্যে ১৫জনের নরমাল ও ১৬জনের সিজার, আগস্ট মাসের ৩৭জনের মধ্যে ২১জনের নরমাল ও ১৬জনের সিজার, সেপ্টেম্বর মাসের ৩৭জনের মধ্যে ৩০জনের নরমাল ও ৭জনের সিজার, অক্টোবর মাসের ৩২জনের মধ্যে ২৭জনের নরমাল ও ৫জনের সিজার, নভেম্বর মাসের ৪১জনের মধ্যে ২৬জনের নরমাল ও ১৫জনের সিজার এবং ডিসেম্বর মাসের ২৭জনের মধ্যে ২১জনের নরমাল ও ৬জনের সিজার করা হয়েছে। নরমাল ও সিজারের শতকরা অনুপাত ৬৭.২২ ঃ ৩২.৬৮। গড়ে প্রতিদিন ১জনের ডেলিভারী হচ্ছে এখানে।
রাজবাড়ী মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র (ম্যাটার্নিটিতে) ডেলিভারীর এই সংখ্যা জনসংখ্যা অনুযায়ী সেবা প্রত্যাশীদের তুলনায় নিতান্তই অপ্রতুল। ডেলিভারীসহ যাবতীয় ওষুধ বিনামূল্যে হওয়ার কারণে এখানে দরিদ্র প্রসূতি নারীরা প্রতিনিয়ত এখানে ডেলিভারীর জন্য আসেন। অভিযোগ রয়েছে, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র অসাধু কতিপয় স্টাফ ও চিকিৎসকের বাণিজ্যিক কারণে অফিস সময় পরে এবং রাতে ডেলিভারী বা সিজারের জন্য আগত বেশীরভাগ নারীকে ডাক্তার, এনেসথেসিয়াসিস্ট, স্টাফ ও আনুষঙ্গিক সরঞ্জামাদি না থাকার অজুহাতে তাদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ফলে বাধ্য হয়ে তারা ক্লিনিকে গিয়ে সিজার করে সন্তান জন্ম দেয়। যে স্বল্পসংখ্যক ডেলিভারী করা হয়, সেগুলো নিতান্তই নিয়ম রক্ষার খাতিরে অথবা প্রভাবশালীদের তদবীরে। ফলে সৌভাগ্যবান কয়েকজন ছাড়া প্রসূতিরা সরকারী এই সেবা থেকে বঞ্চিত হন। আবার অনেককেই সো নিতে এসে কাঙ্খিত সেবার পরিবর্তে রেফার করা হয় জেলা ও জেলার বাইরের বিশেষায়িত হাসপাতালে। অথচ একই চিকিৎসক দ্বারা সেই সেবা মেলে স্থানীয় ক্লিনিকে। এ ছাড়াও রাজবাড়ী মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে(ম্যাটার্নিটিতে) চলমান অন্যান্য কার্যক্রম নিয়েও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ।
এ বিষয়ে সম্প্রতি ‘পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহ’ উপলক্ষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত অবহিতকরণ সভায় রাজবাড়ী মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যম কর্মীসহ সুধীবৃন্দের তোপের মুখে পড়েন। সেখানে রাজবাড়ী মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে কার্যক্রমের তীব্র সমালোচনাসহ কাঙ্খিত সেবা প্রদানের আহ্বান জানানো হয়।