বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৪:৫১ অপরাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

কালের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে দৃষ্টিনন্দন বাবুই পাখির বাসা

  • আপডেট সময় রবিবার, ১৭ মার্চ, ২০১৯

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ বাবুই পাখিকে নিয়ে কবির ‘স্বাধীনতার সুখ’ কবিতাটি আজো মানুষ উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করলেও হারিয়ে যেতে বসেছে বাবুই পাখি ও বাবুই পাখির বাসা। বাবুই পাখির বাসা আজ অনেকটা স্মৃতির অন্তরালে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। অথচ আজ থেকে প্রায় ১২/১২ বছর আগেও গ্রাম-গঞ্জে তাল, নারকেল ও সুপারি গাছে দেখা যেত বাবুই পাখির নিপুন কারু কাজে তৈরি দৃষ্টিনন্দন বাসা।
তাইতো মানুষকে মানবিকভাবে জাগ্রত করার জন্য কবি রজনীকান্ত সেন বাবুই পাখিকে নিয়ে রচনা করেন কবিতা “বাবুই পাখিরে ডাকি বলিছে চড়াই, কুঁড়ে ঘরে থেকে কর শিল্পের বড়াই! আমি থাকি মহা সুখে অট্টালিকা পরে, তুমি কত পাও কষ্ট রোদ বৃষ্টি ঝড়ে। পাকা হোক তবু ভাই পরের বাসা, নিচ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর খাসা”। তার এ কালজয়ী কবিতাটি এখনো মানুষের মুখে মুখে।
রাজবাড়ী সদর উপজেলাসহ আশপাশ এলাকার বিভিন্ন গ্রামে এখন আর আগের মত বাবুই পাখির নিপুণ তৈরি করা দৃষ্টিনন্দন বাসা চোখে পড়ে না। এসব বাসা শুধু শৈল্পিক নিদর্শনই ছিল না, মানুষের মনে চিন্তার খোরাক জাগ্রত এবং স্বাবলম্বী হতে উৎসাহিত করত। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে ও পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে আজ এ পাখিটি আমরা হারাতে বসেছি।
গাছের ঝুড়ির মতো চমৎকার বাসা বুনে বাস করায় এ পাখির পরিচিতি জগৎ জোড়া। খড়, তাল গাছের কচি পাতা, ঝাউ ও কাশবনের লতা-পাতা দিয়ে উঁচু তালগাছে চমৎকার বাসা তৈরি করতো বাবুই পাখি। সেই বাসা যেমন আকর্ষণীয় তেমনি মজবুত। প্রবল ঝড়েও তাদের বাসা ভেঙ্গে পড়ে না। বাবুই পাখির শক্ত বুননে এ বাসা টেনেও ছেঁড়া যায় না। এ জন্য অনেকেই এতে তাঁতি পাখি বলে ডেকে থাকেন।
বাবুই পাখির অন্যতম বৈশিষ্ট হলো রাতের বেলায় ঘর আলোকিত করতে জোনাকি পোকা ধরে নিয়ে বাসায় রাখে এবং সকাল হলে ছেড়ে দেয়। একটি বাসা তৈরি করার পর পুরুষ বাবুই পাখি সঙ্গীর খোঁজে নামে। সঙ্গী পছন্দ হলে স্ত্রী বাবুই পাখিকে সাথী বানানোর প্রয়োজনে পুরুষ বাবুই নিজেকে আকর্ষণীয় করতে খাল, বিল ও ডোবায় ফুর্তিতে নেচে নেচে বেড়ায় গাছের ডালে ডালে। প্রজনন সময় ছাড়া অন্য সময় পুরুষ ও স্ত্রী বাবুই পাখির গায়ে কালো কালো দাগসহ পিঠ হয় তামাটে বর্ণের। নিচের দিকে কোন দাগ থাকে না। ঠোঁট পুরো মোসাকার ও লেজ চৌকা। তবে প্রজনন ঋতুতে পুরুষ পাখির রং হয় গাড় বাদামি। বুকের ওপরের দিকটা হয় ফ্যাকাশে; অন্য সময় পুরুষ ও স্ত্রী বাবুই পাখির চাঁদি পিঠের পালকের মতই বাদামি হয়। বুকের কালো ডোরে ততটা স্পষ্ট নয়।
বাবুই পাখি সাধারণত তাল, খেজুর, নারকেল ও আখ ক্ষেতে বাসা বাঁধে। ধান, চাল, গম ও পোকা-মাকড় প্রভৃতি তাদের প্রধান খাবার। একসময় গ্রামে দেখা যেত শ’ শ’ বাবুই পাখির বাসা। বর্তমানে যেমন তালগাছসহ বিভিন্ন গাছ নির্বিচারে নিধন করা হচ্ছে। তেমনি হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই পাখিও। বাবুই পাখির এ শৈল্পিক নিদর্শনকে টিকিয়ে রাখার জন্য সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার বলে জানিয়েছেন পরিবেশবিদরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!